ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১

অপরাধ দমনে কন্ট্রোল রুম: চট্টগ্রাম পুলিশে পরিবর্তনের ছোঁয়া

সাহেনা আক্তার/মো. মাসুদ রানা, চট্টগ্রাম : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১০:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম পুলিশ বাহিনীতে এবার পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ১৬টি থানার আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি তথা অপরাধ দমনে ‘আইজ অব সিএমপি’ নামে নতুন ডিজিটাল কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সিএমপি সূত্র জানায়, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের নেতৃত্বে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ‘আইজ অব সিএমপি’ অন্যতম। সূত্র জানায়, পুলিশের সাথে জনগণের দূরত্ব ঠেকাতে এবং সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ধারাবাহিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে অপরাধ দমনে নতুন ডিজিটাল কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এ কন্ট্রোল রুমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আইজ অব সিএমপি’। সিএমপির পরিচালনাধিন, একটি নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে পুরো নগরকে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এতে করে অপরাধীদের অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আসামি শনাক্তকরণ সহজতর হবে বলে জানা গেছে। এ কারণে বৃদ্ধি পাবে সেবার মানও। অপরাধ দমনে সিএমপির কন্ট্রোল রুম আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর প্রাক্কালে গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) নতুন মিডিয়া রুমে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ৭শ’টি সিসিটিভি ক্যামেরা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। এই ৭শ’টি ক্যামেরার মধ্যে গুরুত্ব বিবেচনায় ৪শ ১১টি ক্যামেরার সংযোগ দেওয়া হয় সিএমপির কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে এবং অবশিষ্ট ৩শ ২৪টি ক্যামেরা ২৪/৭ অনস্ক্রিন সচল থাকে। সিএমপি কমিশনার বলেন, এসব ক্যামেরার ধারণকৃত ফুটেজ ১৫ দিন পর্যন্ত হার্ডডিস্কে সংরক্ষিত থাকবে। সার্বক্ষণিক দুইজন অপারেটর এ সব ক্যামেরার কার্যক্রম মনিটরিং করবে। পাশাপাশি একটি টেকনিক্যাল টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে ক্যামেরার কার্যক্রম সচল রাখার জন্য। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যথাক্রমে জিইসি মোড়, শোলশহর দুই নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, অক্সিজেন, পতেঙ্গাসহ প্রায় ৭০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ কার্যক্রমের আওতায় সমগ্র নগরের এলাকাকে সিএমপির নিজস্ব ক্যামেরার অধীনে নিয়ে আসা হবে। একইসাথে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে স্থাপন করা হবে ‘ফেইস ডিটেকশন’ ও নাম্বার রিডেবল ক্যামেরা। তৈরি করা হবে ভিডিও ভিত্তিক ক্রাইম ম্যাপ। সম্ভাব্য অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সেসব এলাকায় বিশেষ আইপি ক্যামেরার সঙ্গে ডিউটিরত পেট্রোল গাড়ির সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীনুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. শামসুল আলম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. আমির জাফরসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সিএমপির এই উদ্যোগটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, সচেতন নগরবাসী। তাদের মতে, নগরীর ১৬টি থানা এলাকায় চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কিশোর গ্যাং ও মাদক কারবারিদের তৎপরতা সবচাইতে বেশী। যদিও সংশ্লিষ্ট থানাগুলো নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবু কমছেনা এদের দৌড়াত্ন্য। বর্তমানে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিএমপি’র স্থাপিত কন্ট্রোল রুম এসব দমনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল।