বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৯টি কারাগার রয়েছে। এ কারাগারগুলোর মোট ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার বন্দি হলেও বর্তমানে সেখানে বন্দি রয়েছে ৬৫ হাজার। এ সংখ্যা আগের মাসগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কারাগারের এ চাপ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে কারা সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক জানান, দেশের ৬৯টি কারাগারের মধ্যে ১৭টি কারাগার অনেক পুরোনো এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারাগারগুলো দ্রুত সংস্কার, মেরামত ও পুনর্র্নিমাণের প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, সরকার এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন জানান, ৫ আগস্ট এবং তার পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে ২২ শতাধিক বন্দি পালিয়ে যায়। এর মধ্যে ১৫০০ জনকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও এখনো প্রায় ৭০০ বন্দি পলাতক রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ১১ জন মুক্তি পেয়েছেন। এ ছাড়া জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিদের সংখ্যা ১৭৪। পালিয়ে যাওয়া ৭০০ বন্দির মধ্যে জঙ্গি সংগঠন, বিশেষ করে জেএমবির সদস্য রয়েছে ৭০ জন। তাদের খুঁজে বের করতে এবং পুনরায় আটক করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার হলেও বর্তমানে বন্দি রয়েছে ৬৫ হাজার। গত আগস্টে বন্দির সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ হাজার। কারাগারের উপর এ অতিরিক্ত চাপ বন্দিদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন জানান, পলাতক বন্দিদের ধরতে বিশেষ দল কাজ করছে। বিশেষ করে আলোচিত মামলা সংশ্লিষ্ট এবং জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের পুনরায় গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
দেশের কারাগারগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি ও পলাতক বন্দিদের বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিশেষত ঝুঁকিপূর্ণ কারাগারগুলোর অবস্থা এবং জঙ্গি মোকাবেলার বিষয়টি সরকারকে আরও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক তৎপরতা এবং কারা ব্যবস্থাপনায় সংস্কার কার্যক্রম এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সহায়ক হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
বায়ান্ন/এসএ