একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক গণপরিষদ সদস্য পাবনার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন আর নেই। শনিবার ভোরে পাবনা শহরের পৌর এলাকার নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। গোলাম হাসনায়েন র্দীঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
গোলাম হাসনায়েন বৃহত্তর পাবনার বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় তার নানা জমিদার মনির উদ্দিন আহমেদের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে পাশ করেন। ১৯৬১ সালের ১০ এপ্রিল তিনি পাবনা জেলা বারে আইনজীবি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে উত্তরবঙ্গের স্পেশাল মার্শাল ল কোর্টের স্পেশাল পিপি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে উল্লাপাড়া আসন থেকে সদস্য (এমসিএ) নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সংগ্রহসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে ১৯৭২ সালে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য সরকার তাকে চলতি বছর একুশে পদক প্রদান করে। অ্যাভোকেট গোলাম হাসনায়েনের মৃত্যুতে পাবনার মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।