চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৮০.৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ৭.০৫ শতাংশ। সেবছর পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন ডা. দীপু মনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরি নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকারসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা।
এদিন সকালে পরীক্ষার ফলের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেসময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ছাড়াও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ৭৮ হাজার ২১৬ জন পরীক্ষার্থী ছিল। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা হচ্ছে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৯৮০ জন। ছাত্রী সংখ্যা হচ্ছে ১০ লাখ ৫৩ হাজার ২৪০ জন।
এদিকে অতীতে কখনো ছুটির দিনে (শুক্রবার) পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়নি। এবারই প্রথম ছুটির দিনে ফল প্রকাশ হচ্ছে।
০২৩ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রদের মধ্যে পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ও ছাত্রীদের মধ্যে ৯৮ হাজার ৬১৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ২২০ জন। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৬ হাজার ২১৩ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে ভোকেশনালে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১৮ হাজার ১৪৫ জন।
প্রাপ্ত ফলাফলে ঢাকা বোর্ডে ১১ দশমিক ১২ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ, যশোরে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, চট্রগ্রামে ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ, বরিশালে ৭ শতাংশ, সিলেটে ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ, কারিগরিতে ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। সর্বমোট ১১টি বোর্ডে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছেন।
এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ২২০ জন। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২১৩ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৪৫ জন।
গত বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ কম পেয়েছে ৮৬ হাজার ২৪ জন।
গত বছর দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলে এবার গড় পাসের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সেবছর পৃথকভাবে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গড় পাসের হার ৮৮.১০ শতাংশ, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮২.২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৮৪.০৭ শতাংশ ছিল।
এছাড়া সাধারণ শিক্ষা শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে ঢাকায় পাসের হার ৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৬.০৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৫.৮৮ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯১.২৮ শতাংশ, যশোরে ৯৫.০৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮৭.৫৩ শতাংশ, বরিশালে ৮৯.৬১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৮১.১৪ শতাংশ, সিলেটে ৭৮.৮২ শতাংশ।
এসএসসি ও সমমানের ফল তিনভাবে জানতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। ফল প্রকাশ হওয়ার পরপরই সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক সেট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থী সেখান থেকে ফল সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে বফঁপধঃরড়হনড়ধৎফৎবংঁষঃং.মড়া.নফ প্রবেশ করে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবে।
এর বাইরে এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। সেক্ষেত্রে মোবাইলফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে ইংরেজিতে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর দিতে হবে। এরপর আবারও স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে (উদাহরণ-SSC DHA ROLL YEAR)। ফিরতি মেসেজে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক রেজাল্ট শিট পেতে বোর্ডের ওয়েবসাইট প্রবেশ করতে হবে। এরপর রেজাল্ট কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইআইআইএন (EIIN) এন্ট্রি করতে হবে। তাহলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল শুরু হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। শেষ হয় ২৮ মে। সে হিসেবে ৩০ জুলাই এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিন পূর্ণ হবে। সাধারণত দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের রেওয়াজ আছে। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটছে না।
এবার এসএসসি পরীক্ষায় নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা কারিগরি বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।