সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার লামা গভুরটিকি গ্রামে নেশায় আসক্ত স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রাজনা বেগম নামের এক নারী। পাশের গ্রামের ইয়াওর মিয়া নামের এক ব্যক্তি তার ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা করায় ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন লামা গাভূরকিটি গ্রামের আব্দুল হকের মেয়ে রাজনা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১ মে পাশের গ্রাম নুরপুরের ইয়াওর মিয়া আমার স্বামীকে তাদের নিয়মিত বাজে নেশার আড্ডায় নিয়ে যেতে আমাদের বাড়িতে আসেন। এতে বাধা দেওয়ায় ইয়াওর মিয়াসহ অন্যরা মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। উপায় না দেখে আমি মামলা দায়ের করি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘মামলার খবর শুনে ইয়াওর মিয়া আমার বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন এবং অন্যথায় প্রাণে হত্যার হুমকি দেন। মামলা না তোলায় গত ৩ জুন ইয়াওর মিয়া ও তার সহযোগীরা আমার বাবার বাড়িতে এসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা করেন। ধরালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপানো এবং দেশিয় অস্ত্রের আঘাতে আমরা ডান হাতের হাড় ভেঙে যায় এবং রক্তাক্ত জখম করে তারা পালিয়ে যায়।’
রাজনা বেগম জানান, এ ঘটনার পর স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে, ছাড়পত্র পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে থানার লোকজন তাকে আদালতে গিয়ে মামলার পরামর্শ দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, আদালতে মামলা দায়ের করার পরও ইয়াওর মিয়ার হাত থেকে কোনোভাবে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। থানা পুলিশের চোখের সামনে বুক ফুলিয়ে সে হাটছে; এমনকি ওসমানীনগর থানার সোর্স হিসেবে সে কাজ করছে এবং থানা পুলিশ তার কব্জার মধ্যে রয়েছে বলে লোকজনকে বলে বেড়াচ্ছে। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা নাকি তাকে খোঁজে পাচ্ছেন না।
নির্যাতনের শিকার রাজনা বেগম বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর ইয়াওর আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেছে। নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে, এমনকি আমার মেয়েদের রাস্তাঘাটে পেলে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।’
ইয়াওর মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উল্লেখ করে তিনি জানা, স্থানীয়ভাবে ইয়াওর মিয়া ওসমানীনগর থানার দালাল হিসেবে পরিচিত। অনেক মামলার আসামি। ইতোপূর্বে খুন, ধর্ষণের মামলা মামলা রয়েছে। বর্তমানে নারী ও শিশু ২৬২/২৩ একটি ধর্ষণ মামলা ইয়াওর মিয়ার বিরুদ্ধে বিচারধীন রয়েছে। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকা রাজনা বেগম ইয়াওর মিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।