পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ইয়াবা এনে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে পানের ভেতরে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে বেশি দামে বিক্রির জন্য ঝুঁকি নিয়েই ঢাকায় আনতো একটি মাদককারবারি চক্র। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা এর আগেও ঢাকা শহরে ইয়াবা সরবরাহ করেছে।
তবে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি তারা। র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলের তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর অভিযানে রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবসাসহ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. আইয়ুব (৩৫), আব্দুস শুকুর (৫৪) ও মো. আমির হোসেন (৬৫)।
রোববার (১৪ নভেম্বর) ভোরে শ্যামপুর থানার পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই কোটি টাকার ৬৫ হাজার ১০৫ পিস ইয়াবাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা দল আমাদের জানায়, কক্সবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে একটি মাদককারবারি চক্র ঢাকায় প্রবেশ করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০-এর আভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল জোরদার করে। রোববার ভোরে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে যান মাদককারবারিরা। এসময় চার-পাঁচ ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করলে র্যাব সদস্যরা তিন মাদককারবারিকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক জানান, গ্রেফতার আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে তাদের সঙ্গে থাকা পানের ডালা তল্লাশি করে পানের ভাঁজে ভাঁজে ৩২৬টি প্যাকেটে মোট ৬৫ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা পেশাদার মাদককারবারি। তারা বেশ কয়েকদিন ধরে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছিল। গ্রেফতারদের মধ্যে আব্দুস শুক্কুরের নামে পতেঙ্গা মডেল থানায় মাদক মামলা রয়েছে।
এ চক্র কীভাবে ইয়াবা সংগ্রহ করতো ও চক্রের গডফাদার কে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, চক্রটি দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করতো। এরপর কক্সবাজারের একটি বাসায় পানের ভেতরে অভিনব কায়দায় ইয়াবার প্যাকেট লুকানো হতো। এরপর গাড়িতে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হতো। চক্রটির কক্সবাজারে একজন ও ঢাকায় একজন গডফাদার রয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতারের স্বার্থে আপাতত নাম-পরিচয় বলা যাচ্ছে না। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে এবং পরে গ্রেফতারের পর বিস্তারিত জানানো হবে।