মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে সোমবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। এতে গণমহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ফজলুর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ইউএনও।
ইউএনও বরার দেয়া ওই ছাত্রীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইতিহাসের শিক্ষক ফজলুর রহমান বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকবার তাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন এবং ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। গত ১৮ জুলাই শিক্ষিকা মিলনায়তনে নিয়ে জোর করে ওই ছাত্রীর শরীরে হাত দেন ও যৌন হয়রানি করেন ফজলুর রহমান।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী লিখেন- 'আমাকে বই দেয়ার কথা বলে স্যার ম্যাডামের স্টাফ রুমে নিয়ে জোর করে আমার মুখের মুখোশ খুলে কিস করেন ও জড়িয়ে ধরেন। আমাকে টাচ করেন।'
ওই ছাত্রী আরো লিখেন- বিষয়টি তাৎক্ষণিক কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়াকে অবহিত করি। অধ্যক্ষ কোন সহায়তা না করে প্রশাসনের কাছে যেতে বলেন।
তবে বিষয়টি কাউকে না জানাতে তার বাসায় গিয়ে শিক্ষক ফজলুর রহমান হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ছাত্রী। ইউএন'র কাছে এ ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তার দাবি জানান দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী।
এনিয়ে কথা হয় কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী ও শিক্ষিকার সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারাও শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ করেছেন। শিক্ষক ফজলুর রহমান নিয়মিতই ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করেন এমন অভিযোগ করে তারা বলেন, এসব বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়াকে অবহিত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা আমার কাছে নানা অভিযোগ নিয়ে আসে। কিন্তু যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন ছাত্রী আসেনি। ইউএনওর কাছে অভিযোগ প্রদানের বিষয়টিও আমার জানা নেই। এই বিষয়টি (যৌন হয়রানি) আমি আজকেই আমি প্রথম শুনলাম।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলুর রহমানের সাথে সোমবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বর্তমানে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রইছ আল রেজওয়ান। সোমবার তিনি বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে আজকে একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।