ঢাকা, শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ই পৌষ ১৪৩১

কর্মবিরতিতে সিলেটের পুলিশ সদস্যরা

সিলেট ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৮ অগাস্ট ২০২৪ ০৮:০১:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

পুলিশ বাহিনীর সংস্কার ও কর্মস্থলে নিরাপত্ততার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের সদস্যরা।

 

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট)  সিলেট নগরীর মিরের ময়দানস্থ পুলিশ লাইনসে সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের সদস্যরা মিলিত হয়ে বিক্ষোভ করেন ও  ১১ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ঘোষণা দেন।

 

ফলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম কতৃক দেশের সব পুলিশ সদস্যকে বৃহস্পতিবার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দিলেও  সিলেটের জেলা ও মহনগর পুলিশের বেশিরভাগই সদস্যই কর্মস্থলে যাননি।

 

যদিও সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানিয়েছেন, নগরের ছয় থানারই সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে, বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের কতোয়ালি থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার ফটকে তালা ঝুলছে। ভেতরে কেউ নেই।

 

তবে বিকেলে ২/৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা বসিয়ে থানার কার্যক্রম আংশিক চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিকেলে  সিলেট বিএনপির নেতারা থানার কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতও করেন।

 

এধিকে পুলিশের অধিস্তন সদস্যরা বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) কর্মবিরতির ডাক দিয়ে পুলিশ লাইনসে ‘এই মুহুর্তে দরকার পুলিশের সংস্কার’, ‘ আমার ভাই কবরে কমিশনার কেন বাহিরে’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ বিসিএস গেল কই’ ‘পুলিশ বাহিনী দরকার, পুলিশ হবে জনতার’ সহ নানা প্রতিবাদী স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় পুলিশ লাইনসের আবাসিক পরিদর্শক (আরআই) মো. মোফাজ্জল হোসেন তাদের বিরোধীতা করলে অন্য পুলিশ সদস্যরা মিলে তারে মারধর করেন। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সমাধান হয়।

 

পুলিশ সদস্যদের কর্মবিরতী কর্মসূচির  সমন্নয়ক কনস্টেবল মো. কামরুল ইসলাম রাকিব বলেন, গত ৫ আগস্ট আমাদের এভাবে অরক্ষিত ফেলে রেখে আমাদের সব অফিসাররা চলে গেলেন। আমার সাধারণ পুলিশ সদস্যরা কত হাহাকার করেছি।  তারা কেনে এভাবে আমাদের ফেলে গেলেন। আমাদের কোনো নিরাপত্তা নাই। ৫ তারিখ আন্দোলনের দিনে আমরা যখন মাঠে ছিলাম তখন আমারে স্যাররা পালিয়ে গেলেন। আমাদের প্রতিটি ওয়ারলেসে তখন আমাদের ভাইদের হাহাকার। সবাই বলতেছে আমাদের ধোয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। মানুষ আমাদের পিঠিয়ে মেরে ফেলতেছে।

 

তিনি বলেন, আমরা এত পরিমান অরক্ষিত ছিলাম শুধুমাত্র আমাদের অফিসারদের কারণে। আমরা এখন পুলিশের আইডি কার্ড নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারি না। আমাদের স্যাররা তাদের পদপদবী ও স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটি দলের হয়ে আমাদেরকে মিস ইউজ করেছেন। যারা সামনে আমাদের উধ্বতন কর্তৃপক্ষ আসবেন তারা যেন কোনো দলের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ আমাদের না দেন।

 

তিনি বলেন, আমাদেরকে এভাবে যদি কেউ আর কোনো দলের হয়ে কাজ করতে নির্দেশ দেন আমরা সেই নির্দেশ মানবো না। আমরা জনগনের শত্রু হতে চাই না জনগণের সেবক হতে চাই।  

 

পুরশের ১১ দফার দাবিগুলো হল- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যে সকল পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের বিচার।

 

বাংলাদেশ পুলিশ কোন সরকার বা রাজনৈতিক দলের অধীনে কাজ করবে না বাংলাদেশ পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশের জনগণের সেবা তথা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।

 

সারাদিনে ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি করানো যাবে না। অধঃস্তন কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোন অবৈধ বা মৌখিক আদেশ পালন করবে না। অদস্তন কর্মচারীদের পদোন্নতি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির মতো অবলম্বন করতে হবে। বাৎসরিক নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিন করাতে হবে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মত অধঃস্থন কর্মচারীদের সোর্স মানি দিতে হবে।  বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে ১০ তারিখের মধ্যে টিএ এবং ডিএ বিল পরিশোধ করতে হবে। নতুন বেতন স্কেল প্রণয়ন করতে হবে। ঝুঁকিভাতা বাড়াতে হবে। পুলিশ হেডকোয়ার্টারস থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেকটি পুলিশ লাইন্স, থানা, ফাঁড়ি, গার্ড, ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনি জোরদার করে নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।