চাটমোহর উপজেলার চর-মথুরাপুর গ্রামের কল্পনা খাতুন (০৯) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মূল আসামি নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামালকে (১৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার চাটমোহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার সকালে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রেজিনূর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামাল চাটমোহর উপজেলার চর-মথুরাপুর গ্রামের আনিছুর রহমান মল্লিক এর ছেলে।
নিহত কল্পনা খাতুন চাটমোহর উপজেলার চর-মথুরাপুর গ্রামের মৃত তাজের খাঁ এর মেয়ে। নুরুজ্জামান নিহতের চাচা হন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রেজিনূর রহমান বলেন, মামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়ে চাটমোহর থানাসহ জেলা গোয়েন্দা শাখা নিবিড় তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলমান থাকার এক পর্যায়ে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরিফ শেখকে গত শুক্রবার রাতে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুর জামাল কল্পনা খাতুন হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, নিহত কল্পনা খাতুন (০৯) তার প্রতিবেশী ভাতিজী হয়। তার বাড়ীর পার্শ্বেই অভিযুক্তের বাড়ী। ১৩ ডিসেম্বর রাতে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া থানাধীন দহপাড়া খানকা শরিফে ইসলামী জালসা ছিল। আসামি নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামাল উক্ত জালসায় গিয়ে ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে একই তারিখ রাত অনুমান সাড়ে ৭টার সময় জালসার পার্শ্ববর্তী স্কুল মাঠে গিয়ে মাদকদ্রব্য গাঁজা সেবন করে।
গাঁজা সেবন করার পরে নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামাল শরীর খারাপ অনুভূতি হওয়ায় সে স্কুল মাঠ থেকে বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাড়ী ফেরার পথে স্কুল মাঠের কোনায় নাগরদোলার পার্শ্বে কল্পনা খাতুনকে বসে থাকতে দেখে তাকে বাড়ী যাওয়ার কথা বলে। কল্পনা খাতুনকে বাড়ীতে নিয়া যাওয়ার কথা বলে রওনা করে।
কিন্তু নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামাল বাড়ীর রাস্তায় না গিয়ে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে কল্পনা খাতুনকে পায়ে হাটিয়ে চাটমোহর থানাধীন গুনাইগাছা ইউপিস্থ পৈল্লানপুর সাকিনে চাকলার দিয়ার বিলের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় কল্পনা কান্নাকাটির কারনে লোকজন জেনে যাবে এমন ভয়ে ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর গলা চেপে ধরে। কিছুক্ষণ গলা চেপে ধরে থাকার কারনে। কল্পনা খাতুন শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল ভিকটিম কল্পনা খাতুন এর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার পড়নের পায়জামা খুলে ভিকটিমের গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুর জামালকে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) আদালতে সোপর্দ করা হয়। নুরজ্জামান বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।