বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটার পরও আবারো রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন সনদ,জাতীয়তা সনদ ও প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলার মিজানুর রহমান। তার দেওয়া এসব সনদ দিয়ে রোহিঙ্গা যুবক স্থানীয় এক নারীকে নানী পরিচয় দিয়ে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে গেলে সেখানেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। পরে কাউন্সিলার মিজানুর রহমান তার জিম্মায় উক্ত রোহিঙ্গা সহ এক নারীকে নিয়ে আসে। এদিকে রোহিঙ্গা ব্যাক্তি জানার পরও তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসারের দায়িত্ববোধ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, ১৭ অক্টোবর কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে পাসপোর্ট করতে যায় মো: সুপাইত নামের এক যুবক। তার কথাবার্তা সন্দেহ হলে তার কাছে বিস্তারিত কাগজ পত্র এবং কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে উক্ত যুবক রোহিঙ্গা। এ সময় মো: সুপাইতকে নাতী পরিচয় দেওয়া শহরের উত্তর নুনিয়ারছড়া শিল্প এলাকার সাবেকুন্নাহার নামের এক মহিলাকে আটক করা হয়। এ সময় রোহিঙ্গা যুবক মো: সুপাইত থেকে কক্সবাজার পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়ারছড়া এলাকার ঠিকানা দেওয়া কক্সবাজার পৌরসভার অনলাইন জন্মসনদ,জাতীয়তা সনদ এবং কাউন্সিলার মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর করা প্রত্যায়ন পত্র ও পাওয়া যায়। এছাড়া উক্ত জাতীয়তা সনদে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলার শাহানা আক্তারের স্বাক্ষর আছে। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে নানী পরিচয় দেওয়া সাবেকুন্নাহার কাউন্সিলার মিজানুর রহমানকে মোবাইলে ডেকে আনে। পরে পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদের নিজ জিম্মায় নিয়ে যায়।
এ ব্যপারে কক্সবাজার আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক মোবারক হোসেন জানান,কক্সবাজারে অনেকে অভিযোগ করে আমরা সাধারণ মানুষকে হয়রানী করি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে রোহিঙ্গারা এবং কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা আমাদের হয়রানী করে। অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন কৌশলে পাসপোর্ট পেতে প্রতরণার আশ্রয় নেয়। এখন সবাইকে কিভাবে জিঙ্গাসাবাদ করা যায়। আর বিষয়টি বলছেন সেখানে স্থানীয় এক নারী উক্ত রোহিঙ্গা যুবককে নাতী পরিচয় নিয়ে আসে। পরে ব্যাপক জিঙ্গাসাবাদে প্রমানিত হয় সে রোহিঙ্গা পরে স্থানীয় কাউন্সিলারের জিম্মায় তাদের প্রাথমিক ভাবে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রকৃয়া চলছে।
এদিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার সমাজপতি সহ অসংখ্য স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,কাউন্সিলার মিজানুর রহমান এর আগে ও রোহিঙ্গাদের ভোটার করাতে ব্যাপক ভাবে সমালোচিত । তার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ভোটার সংক্রান্ত দুদকের মামলাও আছে। তিনি জেলও খেটেছেন। তবুও শিক্ষা হচ্ছে না। এখন আবার নির্বাচিত হওয়ার পর আরো বেপরোয়া ভাবে রোহিঙ্গাদের ভোটার করাচ্ছে। আর প্রতিটি সনদ দেওয়ার জন্য লাখ লাখ টাকা নিচ্ছে। এভাবে পুরু নুনিয়ারছড়া এলাকায় এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে। আমাদের ওয়ার্ডে অন্তত ৪/৫ শত রোহিঙ্গা ভোটার আছে। এখন তাদের ছেলেমেয়ে নাতী নাতনী সহ অন্তত হাজের খানেক রোহিঙ্গা আছে। আমাদের জানা মতে কাউন্সিলার অনেক দালালও নিয়োগ করেছে রোহিঙ্গাদের এনে টাকার বিনিময়ে সনদ দেওয়ার জন্য।
এ ব্যপারে কক্সবাজার পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মিজানুর রহমান বলেন,আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে একটি চক্র বার বার আমাকে বিপদে ফেলছে। এবারও একই ঘটনা হয়েছে। আমি উক্ত সুপাইতকে চিনিনা। তার কোন সনদে আমি স্বাক্ষর করিনি। এগুলো জাল করা হয়েছে। আর আমি জিম্মায় ও নি নাই। পাসপোর্ট অফিসার নিজে তাদের ছেড়ে দিয়েছে।