ঢাকা, রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪শে ভাদ্র ১৪৩১
ফাইল ছবি।

কয়েকদিন চলমান কারফিউতে চরম দুর্ভোগে নিম্নআয়ের নানা শ্রেণি-পেশার খেটে খাওয়া মানুষ অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন

মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৮:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন
টানা কয়েকদিন মৌলভীবাজারে চলমান কারফিউতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। গত কয়েকদিন থেকে কোনো আয় রোজগার না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে পরিবহন, হোটেল শ্রমিক, মৎস্যজীবীসহ নানা শ্রেণি- পেশার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ বছর ভয়াবহ দীর্ঘ বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার মানুষের আয় রোজগার ও ক্ষেত-কৃষি হারিয়ে সংকটে রয়েছেন। এখন নতুন করে চলমান পরিস্থিতি তাদের মহাদুর্ভোগে ফেলেছে। এ অবস্থায় জেলা ও উপজেলা শহর এলাকায় দোকানপাট ও হোটেল রেস্তরাঁ বন্ধ থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি আয় রোজগার না থাকায় তারাও পড়েছেন চরম দুর্দশায়। বড় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ ছাড়া সাধারণ মানুষদের জন্য প্রতিদিন ২০ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। তবে এ সময়ে তাদের দোকান খুলে পসরা সাজাতে আর দোকান বন্ধ করতে অর্ধেকের বেশি সময় চলে যাচ্ছে। এমনটি জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। জেলা ও উপজেলার EDER বাজারগুলোতে মাছ, মাংস, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ অনেক কম। এজন্য মানুষ চাহিদামতো পণ্য কিনতে পারছেন না। আর যা পাচ্ছেন তা কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে পণ্য পরিবহনের সংকট রয়েছে। তার ওপরে আবার কারফিউ। এজন্য ভয়ে অনেকে পরিবহন বের করতে চাচ্ছেন না। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পণ্যও পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য ক্রেতাদের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া যেগুলো মিলছে তার দামও অনেক বেশি। এদিকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় সবধরনের ব্যাংকিংসেবা বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রবাসী পরিবার, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও সর্বোত্তরের মানুষ। টাকা উত্তোলন করতে না পাড়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। এ ছাড়াও তারা প্রবাসী স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় রয়েছেন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। ইন্টারনেট সেবা চালু না থাকায় প্রবাসী অধ্যুষিত এ জেলায় এখন প্রিপেইড মিটারের গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বিল দেয়া নিয়েও পড়েছেন অন্তহীন বিড়ম্বনায়। এ ছাড়া কারফিউয়ের তৃতীয় দিনে সোমবার জেলায় আগের দু'দিনের চেয়ে শহরে বেড়েছে টমটম, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের না হলেও আগের চেয়ে বেড়েছে মানুষের চলাচল। জেলা জুড়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। জেলায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া টহল চলছে। মৌলভীবাজারে মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে বলে জানান তিনি।