সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে বহন করা প্রিজন ভ্যান ভক্তরা আটকে দেওয়ার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেনবলে জানা যায় ।
মঙ্গলবার ( ২৬ নভেম্বর) বেলা পৌনে তিনটার দিকে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণকে আদালত থেকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া প্রিজন ভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তার ভক্তরা। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
চিন্ময় কৃষ্ণকে সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগের মামলায় গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষচারীকে।
আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। কিন্তু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষচারীকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন ভক্তরা।
একপর্যায়ে বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা শুরু করে। পরপর কয়টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান অবস্থানকারীরা। এরই মধ্যে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যেতে চাইলে সেটির চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের গাড়িতে করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষচারীকে চট্টগ্রাম কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর সারাদেশে বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুরা বিক্ষোভ শুরু করে।
গত ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ গণমাধ্যমকে জানান, আগামীকাল বুধবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।
এদিকে,চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় গুরুতর আহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত ঘোষণা করেন। হামলার এ ঘটনায় আহত ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ অ্যাডভোকেট এনামুল।
নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা নাম জালাল উদ্দিন। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান।
বায়ান্ন/এসএ