ঢাকা, মঙ্গলবার ২ জুলাই ২০২৪, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩১

চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় গরিবেরা হক বঞ্চিত: ভোক্তা ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৯ জুন ২০২৪ ০৬:০০:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা একটি ইমানি দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে না পারায় সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ তাদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষার যে লক্ষ্য নিয়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে, পোস্তগোলায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অব্যাহত থাকায় সে লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়নি। এ বছর কোরবানির চামড়া ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট দেখা না গেলেও এর প্রভাব রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। দেশে চামড়ার চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি হওয়ায় এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

 

শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর এফডিসিতে কাচাঁ চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভোক্তা ডিজি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

 

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতি বছর ২০  লাখ চামড়ার চাহিদা থাকলেও চামড়ার যোগান হচ্ছে ২ কোটি। কোরবানির ঈদের সময় ঢাকায় ৪ লাখ উদ্বৃত্ত চামড়া থাকে, যা প্রক্রিয়াকরণ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা যায় না।

 

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে চামড়ার দামে ক্রমাগত যে ধস নেমেছে, তা এখনও পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে ট্যানারি মালিক ও আড়ৎদাররা সিন্ডিকেট করে পানির  দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছেন প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের। চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো সিন্ডিকেট আছে কি না, তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা দরকার। কোরবানির চামড়ার মূল্য গরিব দুঃখী মানুষের হক। সিন্ডিকেট করে যদি কেউ এই হক নষ্টের সাথে জড়িত থাকে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ। বিষয়টি জাতীয় সংসদে আলোচনার দাবি রাখে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কমনা করছি।

 

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়ার বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে এলডব্লিউজি সনদ অর্জনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। এছাড়া পরিবেশগত সুরক্ষা ও সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরী। ঢাকায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রীভূত না করে জেলা পর্যায়ে আধুনিক প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করা গেলে জনগণ তার সুফল পাবে। তাহলে চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

 

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ইশরাত শবনম, স্থপতি ফৌজিয়া ভূইয়া ও সাংবাদিক সেলিম মালিক। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।