মাদারীপুর জেলার শিবচরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আবু সালেহ মুছা নামে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার শিবচর প্রতিনিধির বসত বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ওই সাংবাদিকের বাড়ির একটি ঘর সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে শিবচর থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও ৬ টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় দৈনিক কালবেলা পত্রিকার শিবচর প্রতিনিধি ও বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মফিতউল্লাহ হাওলাদারের কান্দি গ্রামের আমজাদ হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। তার ছেলে আবু ছালেহ মুছা দৈনিক কালবেলা পত্রিকার শিবচর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। সাংবাদিক পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে প্রতিবেশী দাদন বেপারীর ছেলে সাদ্দাম বেপারীর সাথে । সেই বিরোধীদের জের ধরে সোমবার সকালে শিবচর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শত লোকজন আবু সালেহ মুছার বসত বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।
এ সময় ঘরের সকল আসবাবপত্র বাইরে ফেলে দেয়। সম্পূর্ণ ঘরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় তারা। ঘরের টিনের চালা ও বেড়া খুলে নিয়ে যায়! এতে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি।
এ ঘটনায় শিবচর উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও শিবচর থানা পুলিশের একটি যৌথ অভিযানী দল ঘটনাস্থলে আসে। পরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ সময় ঘরবাড়ি ভাঙচুরে অংশ নেয়া কাউকেই গ্রেফতার না করতে পারলেও তাদের ব্যবহৃত ছয়টি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে শিবচর থানা পুলিশ।
এ ঘটনার সাংবাদিক আবু সালেহ মুছার মা লতিফা ইয়াসমিন লতা বলেন, 'আমরা প্রায় এই বাড়িতে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছি। আজ সকালে বিএনপি নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে আমার বসত ঘরে ভাঙচুর করেছে। এতে আমার প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।'
আবু সালে মুসার বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, 'আমাদের বাড়িঘর সবকিছু ভাঙচুর করে ফেলেছে। সেনাবাহিনী পুলিশ এসে আমাদেরকে রক্ষা করেছে তা না হলে ওরা আমাদেরকেও প্রাণে মেরে ফেলত। আমরা এখনো চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছি যেকোনো মুহূর্তেই ওরা আবারো আমাদেরকে আক্রমণ করতে পারে।'
সাংবাদিক আবু সালেহ মুসা বলেন, 'তারা মোট তিনবার আমাদের বাড়িতে হামলা করল! এর আগে আরো দুইবার হামলা করেছে। আমরা এই জমির আদালতের রায় পেয়েছি। রায় পাওয়ার পর তারা আমাদের উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আজকে সকালে তারা আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমাদের বসতবাড়ি একদম মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদ্দাম বেপারী বলেন, 'ওরা দীর্ঘদিন আমাদের জমি জোর করে দখলে রেখেছিল। আজ আমাদের জমি দখলে নিতে গিয়েছিলাম। এই জমিতে আমার সাব-কবলা রয়েছে। আমরা অন্যের জমি জোর করে দখল করিনি বরং দীর্ঘদিন ধরে ওরাই আমাদের জমি দখল করে রেখেছিল।'
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ বলেন, 'খবর পেয়ে দ্রুতই সেনাবাহিনী সহ উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এবং ভাঙচুর প্রতিরোধ করি। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি মোটরসাইকেল জব্দ করি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ করেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে