সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পশ্চিম চটি ও ফতেপুর ইউনিয়নের বাগেরখাল (সাইনবোর্ড) এলাকায় রাত হলেই শুরু হয় পাহাড়-টিলা কাটা। গত দুই সপ্তাহ থেকে ৭নং গ্যাস কুপের বিপদজনক এলাকা সহ আরো কয়েকটি এলাকায় এস্কেভেটর দিয়ে টিলা কাটা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বার বার অভিযান পরিচালনা করলেও পাহাড়-টিলা কাটায় জড়িত সিন্ডিকেট সদস্যরা জরিমানা দিয়ে পার পেয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলাও হয় না।
স্থানীয়রা জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিঃ এর নতুন ১০নং গ্যাস কুপের সন্ধ্যান পাওয়ায় কৃষি জমি ভরাট করার জন্য টিলা ওপর নজর পড়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের। বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যেনতেনভাবে পাহাড়-টিলা কেটে বালু নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের তোয়াক্কাও করছে না তারা। উপজেলার ৭টি স্থানে এক সাথে ১০টি পাহাড়-টিলা কাটা চলছে।
গত বর্ষা মৌসুমে চিকনাগুল এলাকায় টিলা ধসে একই পরিবারের ৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবু বন্ধ হচ্ছে টিলা কাটা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এস্কেভেটর ও ফেলুডার মেশিন দিয়ে পাহাড়-টিলা কাটা চলছে। প্রতিরাতেই পাহাড়-টিলা কেটে মাটি ও বালু সরিয়ে নেয়া হয়।
সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল হাদি অবাধে টিলা কাটায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে অচীরেই জৈন্তাপুর পাহাড়-টিলা শূন্য হয়ে পড়বে।
টিলা কাটায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে মছদ্দর আলী নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, যেহেতু আমার আর কোন ব্যবসা নেই তাই পাহাড় কাটছি। সমঝোতার মাধ্যমেই কাটা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জৈন্তাপুরে পাহাড় কেটেই চলছেন। কারও কোনো কথা শুনছে না তারা। রাতের আধারে পাহাড়-টিলা ধ্বংস করে একটি সিন্ডিকেট। জরিমানা করেও তাদের থামানো যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, অভিযানে যাওয়ার পর কোন লোকজন পাওয়া যায় না, তারা পালিয়ে যায়। তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে পারি না।
পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ বদরুল হুদা পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বলেন, জৈন্তাপুরে পাহাড় কাটায় জড়িতদের নোটিশ করা হয়েছে কিন্তু কোন মামলা করিনি। আমি একবার অভিযান করে জরিমানা করেছি। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী, পাহাড় কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কেউ পাহাড় কাটতে পারবে না। আমরা নতুন করে তাদের বিরুদ্ধে আবার নোটিশ পাঠাবো।