বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলেন সানজিদা আক্তার। রোববার সকালে বাড়িতে যখন চলছিল মাতম ও বাবার জানাজার প্রস্তুতি, তখন সানজিদার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছিল পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার। সানজিদার বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামে। তাঁর বাবা শামীম আল মামুন (৫২)। পেশায় দলিল লেখক ছিলেন।
সানজিদার বড় ভাই ইমরান হোসেন বলেন, কয়েক মাস ধরে পাকস্থলীর সমস্যায় ভুগছিলেন তাঁর বাবা। পরবর্তী সময়ে কিডনি জটিলতা দেখা দেয়। প্রথমে টাঙ্গাইলের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকার একটি ক্লিনিকে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। এরপর অবস্থার আরও অবনতি হয়। ওই দিনই তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাতে তিনি মারা যান। রাতেই মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। সকালে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে সানজিদা রওনা হন পরীক্ষা কেন্দ্রে।
সানজিদা আক্তার টাঙ্গাইল শহরের সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহাবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। শহরের সরকারি কুমুদিনী কলেজ কেন্দ্রে তাঁর পরীক্ষার সিট পড়েছে। আজ রোববার ছিল ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে সানজিদা বাড়ি আসেন। এর মধ্যেই তাঁর বাবার দাফন শেষে স্বজনেরাও বাড়ি ফিরে আসেন।
সানজিদা আক্তার বলেন, তিনি বাবাকে খুব সম্মান করতেন, ভালোবাসতেন। তাই তাঁর নির্দেশে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করেছেন। বাবার জন্য সবার কাছে দোয়াও চেয়েছেন তিনি।
দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া বলেন, একদিকে বাবা হারানোর শোক, অন্যদিকে পরীক্ষা। সানজিদার বাবার আত্মার মাগফিরাত ও সানজিদার জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।