ঈদের বাকি আর মাত্র ২ দিন। নারীর টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। পোশাক কারখানা ছুটি হলেও ঈদযাত্রায় এখনও স্বাভাবিক রয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যান চলাচল। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়কটি একমুখী করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দুই লেনের ওই সড়কে চার লেনের মতো সুবিধা পাচ্ছে যানবাহনগুলো।
রবিবার (১ মে) মহাসড়কের পৌলী থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কে সকাল ১০ পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি হয়। এ সময় ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই মহাসড়কের টাঙ্গাইল শহর বাইপাস, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়ক ও সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কোথাও যানজট নেই। ঢাকা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়ক ধরে যানবাহন চলাচল করলেও পরে দুই লেন সড়কে প্রবেশ করতে গিয়ে অন্যবার ঈদের আগে যানজটের সৃষ্টি হতো। এবার এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক শুক্রবার থেকে একমুখী করে দেওয়া হয়েছে। দুই লেনের এ সড়কটি দিয়ে শুধু উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চলাচল করছে। ফলে দুই লেনের সড়ক হলেও চার লেনের মতোই সুবিধা পাচ্ছে। অপরদিকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হওয়ার পর বিকল্প সড়কে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা আসছে। শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মহাসড়কের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার আশেকপুর, কান্দিলা, বাইপাস এবং কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বঙ্গবন্ধু সেতুর সংযোগ সড়কের গোলচত্বর এলাকার কোথাও যানজট দেখা যায়নি। এদিকে রাতে যানবাহনের চাপ ছিল দিনের তুলনায় বেশি।
বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে মোট ৪৩ হাজার ২৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিকে গেছে ২৬ হাজার ৯৬৮টি যানবাহন। আর উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে পার হয়েছে ১৬ হাজার ২৫৪টি। এতে টোল আদায় হয় ৩ কোটি ১৪ লাখ, ৮৩ হাজার ৪৫০ টাকা।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে মহাসড়কে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। যে যেভাবে পেরেছে তারা সেভাবেই বাড়ি ফিরেছেন। তবে ট্রাকের সাদে করে ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে দেখা গেছে। সেতুর গোলচত্বর এলাকায় কথা হয় রাজশাহীগামী ব্যক্তিগত গাড়ির আরোহী কাদের মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এবার ঢাকা থেকে রওনা হয়ে কোথাও যানজটে পড়তে হয়নি। শুধু সেতুর টোল প্লাজার কাছে এসে লাইনে পড়তে হয়েছে। বগুড়াগামী বাসের চালক কোরবান আলী বলেন, এবার অনেক ভালভাবে বাড়ি ফিরতে পারছি। কোথাও কোন সমস্যা হয়নি।
মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানান, মহাসড়কের মির্জাপুর অংশসহ চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত কোনো জট নেই। শনিবার বিকেলে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা উত্তরাঞ্চলমুখী হয়েছেন। তারপরও রাস্তা স্বাভাবিক রয়েছে। ঈদের আগে আর যানজট হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এলেঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আতাউর রহমান জানান, মহাসড়কে যানজট নেই। স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। তবে রবিবার থেকে যানবাহনের চাপ আরও কমে যাবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সড়ক একমুখী করায় যানজটে পড়তে হয়নি। শনিবার বিকেল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত এই সময়ে যে গাড়িগুলো চলেছে তা খুবই নিম্নমানের ও ফিটনেসবিহীন ছিল। যে কারণে মহাসড়কে ছয়টি স্থানে গাড়ি বিকল হয়ে যায়। পরে রেকার দিয়ে সেই বিকল হওয়া গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। এই কারণেই মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য গাড়ির দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়।