নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত এবং এ জাতীয় ইবাদতগুলোর জন্য পবিত্রতা জরুরি। স্বাভাবিকভাবে অজু মাধ্যমেই মানুষ পবিত্রতা অর্জন করে। তবে কেউ অসুস্থ হলে বা বিশেষ কোনও পরিস্থিতির কারণে পানি না পেলে তার জন্য অজু ছাড়াও তায়াম্মুমের বিধান রয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাকো কিংবা সফরে থাকো অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে, কিংবা নারীগমন করে থাকো, কিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তির সম্ভাবনা না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৩)
যেসব কারণে তায়াম্মুম করা বৈধ
১. পানি এক মাইল অথবা এর চেয়েও দূরে হতে হবে।
২. পানির কূপ আছে; কিন্তু পানি ওঠানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকলে।
৩. পানির কাছে কোনো ক্ষতিকর প্রাণী অথবা কোনো শত্রু থাকলে এবং কাছে গেলে কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকলে।
৪. উড়োজাহাজ অথবা মোটরগাড়িতে আরোহণ অবস্থায় পানি পাওয়া না গেলে অথবা সুযোগ না থাকলে বা অজু করতে গেলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার ভয় থাকলে তায়াম্মুম করা যাবে।
তবে রেল বা মোটরে তায়াম্মুমের জন্য শর্ত হলো- ১. রেলের অন্য কোনো বগিতে পানি না থাকা। ২. পথিমধ্যে এক মাইলের (১.৬৩ কিলোমিটার) মধ্যে পানি পাওয়া যাবে এরূপ জানা না থাকা।
৫. পানি ব্যবহার করলে রোগ বৃদ্ধি অথবা রোগ সৃষ্টি কিংবা স্বাস্থ্যের ওপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির ভয় হলে। তবে এসব ব্যাপারে অনর্থক সন্দেহ গ্রহণযোগ্য নয়।
৬. অল্প পানি থাকায়, অজু করলে পিপাসায় কষ্ট করতে হবে অথবা খাবার রান্না করতে অসুবিধার আশঙ্কা থাকলে।
৭. যেসব নামাজের কাজা নেই, অজু অথবা গোসল করতে গেলে তা ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে পানি থাকা সত্ত্বেও তায়াম্মুম করা বৈধ হবে। যেমন, দুই ঈদের নামাজ, জানাজার নামাজ। তবে জুমার নামাজের জন্য তায়াম্মুম করা যাবে না।
যেসব বস্তুর মাধ্যমে তায়াম্মুম করা যাবে
পবিত্র মাটি, কঙ্কর, বালি, চুনা, মাটির তৈরি কাঁচা অথবা পাকা ইট, ধুলো-বালি, পাথর ইটের তৈরি দেয়াল। লাকড়ী, কাপড় বা অন্য কোনও পবিত্র বস্তুতে ধুলাবালি লেগে থাকলে, এসব বস্তুর মাধ্যমে তায়াম্মুম করা যাবে। ( আলমগীরী ও আদ্দুররুল মুখতার)