দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে নির্মাণাধীন রেললাইনে আগামী ২ নভেম্বর পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। ওই দিন প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ট্রেন যাবে কক্সবাজারে।
সোমবার সকালে কালুরঘাট রেলসেতু পরিদর্শন শেষে রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আগামী ১২ নভেম্বর নতুন এই রেললাইনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। রেললাইনটি উদ্বোধন হলে প্রথমবারের মতো দেশের রেল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হবে পর্যটননগরী কক্সবাজার।
রেল সংশ্লিষ্টরা জানান, অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে নবনির্মিত এই রেললাইনে পাথর দেওয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি চলছে বিভিন্ন স্টেশনের নির্মাণকাজ। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের ৯২ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ। এখন বাকি রয়েছে সিগন্যাল সিস্টেম, স্টেশনের অবকাঠামো আর লেভেল ক্রসিংয়ের মতো কাজ।
পুরোদমে চলছে পুরোনো কালুরঘাট সেতুর মেরামত কাজও। দুই সপ্তাহের মধ্যে সেতুটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশা করছে রেল বিভাগ। মেরামত শেষে সেতুতে ট্রেনের গতি বাড়বে ৬ গুণ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী বছরের জুন পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও তার আগেই ডিসেম্বরের দিকে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ২ নভেম্বর, আমি নিজে আসব এবং ট্রায়াল রান দেব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ নভেম্বর উদ্বোধনের আগেই এই রেললাইনটি পরিপূর্ণভাবে তৈরি হয়েছে কিনা এটা আনুষ্ঠানিকভাবে এবং সরকারিভাবে আমরা নিশ্চিত হতে চাই।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুতে রেল ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করত। এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ছিল, আমরা সেতুটি মজবুত করে নির্মাণ করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেছি এবং নির্মাণ কাজ অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হবে আশাকরছি। এই সেতুর মাধ্যমে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত হবে । কালুরঘাট সেতুর পাশে আরো একটি ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ, এবং ৪ লেনের সড়কপথসহ সেতু নির্মাণ হবে, আশা করছি আগামী বছর কাজ শুরু হবে।’
পরীক্ষামূলক চলাচলের মাধ্যমে পুরো পথে ট্রেন নিয়ে যেতে আর কোনো সমস্যা দেখছেন না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরকেও এই রেলপথের সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা আছে। কর্তৃপক্ষের আশা, এই রেললাইনের মাধ্যমে মিয়ানমার এবং চীন হয়ে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে বাংলাদেশ।