কলকাতার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি মানেই যেনো আলোচনা। অভিনয়ের বাইরে ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনামের উঠে আসেন এই অভিনেত্রী। এবার নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। স্বস্তিকা মতে, পুরুষের পদোন্নতি হলে পরিশ্রমের ফল, নারীদের ক্ষেত্রে সেটা হয়ে যায় শরীরের বিনিময়।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেন, ২০২৫ সালেও কর্মক্ষেত্রে আমাদের নারী অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হয়। কোনও পুরুষের যদি পদোন্নতি হয় সে ক্ষেত্রে বলা হয় পরিশ্রমের কারণে ও যোগ্যতা দিয়ে পদোন্নতি হয়েছে। কিন্তু একজন নারীর ক্ষেত্রে বলা হয় অনুচিত পন্থায় বা তার শরীরের বিনিময় ও সৌন্দর্যের নিরিখে পদোন্নতি হয়েছে। নারীদের দক্ষতা, কাজের প্রতি অনুরাগ উপেক্ষা করা হয় সবখানেই।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজ ও দেশের অবস্থা খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। আরজি করের ঘটনার পরে মনে হয়েছিল কত কিছু বদলাবে! সম্প্রতি মেট্রো স্টেশনে চুমুর ঘটনাটা নিয়েও তো কত কাণ্ড হল! মানসিকতার যে কোনও রদবদলই হয়নি তা স্পষ্ট। এই পুরো ঘটনায় দোষী একজনই, যিনি চুমু খাওয়ার ভিডিও করেছিলেন আর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে তো কোনও কথাই হল না। তার অন্যায়টা নিয়ে কেউ কথা বলল না, উল্টো ভালবেসে কেউ কিছু করলে সেটা নিয়ে হইচই করা হয়। মেয়েটি চুমু খেয়ে যত অপরাধ করল!’
কাজের ক্ষেত্রে এই বয়সে সৌন্দর্যের চেয়ে চরিত্রের দিকে বেশি নজর দিতে চান স্বস্তিকা। তার কথায়, ‘অভিনয় শেষ কথা। তবে আমার যদি কখনও ইচ্ছে হয় আমি বোটক্স করাব। সবাই করাচ্ছে তাই আমাকেও করাতে হবে এমন নয়। যদি কখনও আমার মনে হয়, এই পাতলা ঠোঁট ভাল লাগছে না অথবা কপালে অত্যধিক ভাঁজ পড়ে যাচ্ছে, তা হলে করাব। মানুষ এত দিনে জেনে গিয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে ভাল দেখতে। ওটা নতুন কিছু নয়। আমার সাজ, সৌন্দর্য মানুষ দেখে নিয়েছেন এই ২৫ বছরে। তা সে শাড়ি হোক অথবা বিকিনি। যা দেখেননি তা হল নতুন চরিত্রের মাধ্যমে আমার অভিনয়। সেটা আমায় দেখাতে হবে।’
শোবিজে মেয়েদের ক্যারিয়ার খুব বেশি লম্বা হয় না- এই কথায় বিশ্বাসী নন স্বস্তিকা। তাই কাজ করে যেতে চান বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই। তখন বৃদ্ধার চরিত্রকে কেন্দ্র করেই গল্প হতে হবে। ছবিতে দিদার চরিত্রের প্রয়োজন বলেই অভিনয় করব না। কারণ যখন কাজ শুরু করেছিলাম শুনতাম, লম্বা সময় পর্যন্ত কাজ করে যেতে হবে। বাবা শিখিয়েছেন, পরের পাঁচ বছরে কোথায় থাকব সেটা না ভেবে এটা ভাবতে হবে যে, আগামী ২৫ বছরে আমি কোথায় থাকব। কত তাড়াতাড়ি উঠতে পারলাম, সেটা বড় কথা নয়। কতটা সময় সেখানে থাকতে পারলাম, সেটা জরুরি।’
বায়ান্ন/একে