ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উজিরমুনি গ্রামে নিজের বাড়ীর গেটে স্ত্রীকে নিয়ে দুদিন ধরে অবস্থান করছেন রায়হান আলী নামে এক যুবক। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে স্ত্রীকে নিয়ে খড়কুটো বিছিয়ে গেটের পাশে বসে আছেন তিনি।
অন্যদিকে গেটে তালাবন্ধ করে দিয়ে তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিজের বাড়ীতেই রয়েছেন। পিছনের দিকে থাকা একটি ছোট দরজা দিয়ে বাড়ী থেকে বের হলেও সেটিতে তালাবন্ধ করে রাখছেন তাঁরা।
প্রবাস ফেরত যুবক রায়হান ওই গ্রামের আইজুল ইসলাম নামে এক কাঠমিস্ত্রির ছেলে। তিনি ৬ মাস আগে মালেশিয়া থেকে বাড়ীতে ফিরেছেন। মালোশিয়ায় ৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রায়হান তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাবার বাড়ীর গেটের পাশে খড়কুটো বিছিয়ে বসে আছেন। এলাকার লোকজন তাদের দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।
জানতে চাইলে রায়হান অভিযোগ করে বলেন, বিদেশে থাকাকালীন সময়ে প্রতিমাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা বাড়ীতে পাঠিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে। বাড়ী নির্মাণ করেছে, বাবা ও ৩জন ভাই বাড়ীর পাশে একটি করাত কল দিয়েছেন। আমি বাড়ীতে ফেরার পর আমাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে দিয়েছে। শ্বশুড়বাড়ী থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে সেটাও বাবাকে দিয়েছি। এখন বাবা প্রায় ৩ মাস হলো তুচ্ছ ঘটনায় স্ত্রীসহ আমাকে বের করে দিয়েছে। আর বাড়ীতে উঠতে দিচ্ছে না। স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় যাবো, কি করব, তাই বাড়ীর গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
রায়হান আরও অভিযোগ করে বলেন, যখন টাকা দিয়েছিলাম বিদেশ থেকে আয় করে, তখন আমি ভালো ছিলাম। এখন বাড়ীতে ফেরার পর আমি সবার কাছে খারাপ হয়ে গেছি। গতকাল থেকে বাড়ীর লোকজন মারপিট করে এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি ও আমার স্ত্রী যায়নি।
রায়হানের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, ছেলে ও বউমাকে বাড়ীতে রাখবো না। তারা আমাদের কোন কথা শুনেন না৷ তাকে না রাখার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৪ শতক জমি রেজিষ্ট্রি ও ১ লাখ টাকা দিয়েছি অন্যস্থানে বাড়ী করার জন্য। ছেলে আমার ও আমার বাড়ীর লোকজনের সম্মান রাখেনি। ওই ছেলেকে আমি ঘরে তুলবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মিঞা বলেন, এর আগে তাদের বাপ-ছেলের ঝামেলা মেটানো হয়েছে। এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদের পরিষদে ডাকা হয়েছে৷