বিদ্যুতের দাম পাইকারিতে (বাল্ক) বাড়াচ্ছে সরকার। এ নিয়ে সব প্রস্তুতি শেষ। খুব শিগগির এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। তবে খুচরাপর্যায়ে এবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে না। বিতরণ কোম্পানিগুলো লাভে থাকায় ভোক্তাপর্যায়ে এখনই বাড়ছে না দাম। ফলে পাইকারিতে দাম বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়বে না।
বুধবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) একজন সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে ছিলেন। তিনি ফিরলেও আবার দুর্গাপূজার ছুটি। এ কারণে চলতি সপ্তাহে ঘোষণা নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে পরের সপ্তাহে অর্থাৎ ৮ অক্টোবরের পর এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।’
গত ১৮ মে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে গণশুনানি হয়। নিয়ম অনুযায়ী- ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শুনানির রায় ঘোষণা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ১৩ অক্টোবরের মধ্যেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে হবে।
সে হিসেবে হাতে সময় খুব কম বলছেন বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় খুবই কম (এ সপ্তাহে)। তবে যে কদিন আছে, তার মধ্যেই অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাম ঘোষণা করবো।’
তিনি বলেন, ‘৫০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠার একটা রায়ের প্রতিটি শব্দ বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখে দিতে হয়। এজন্য একটু সময় লাগছে। রায় ঘোষণার কাজটি ফাইনাল স্টেজে (চূড়ান্তপর্যায়ে) আছে। এটি দু-একদিনের মধ্যেও হতে পারে, আবার ৪-৫ দিনেও হতে পারে।’
জানা গেছে, গত ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদনের ওপর গণশুনানি হয়। গণশুনানিতে বিদ্যুতের দাম প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করে বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি। আইন অনুযায়ী—৯০ কার্যদিবসের মধ্যে রায় ঘোষণা করতে হবে। এ হিসেবে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ঘোষণার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিইআরসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাইকারিপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়ছে না। কারণ বিদ্যুৎ বিতরণকারী সব কোম্পানি বর্তমানে মুনাফায় রয়েছে। তাই বাল্ক বিদ্যুতের দাম ২০-২৫ শতাংশ বাড়ালে তাদের খুব একটা সমস্যা হবে না।’
বিইআরসির একাধিক সূত্র জানায়, কমিশন ১৫-২৫ শতাংশের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করে রেখেছে। এরই মধ্যে তা বিদ্যুৎ বিভাগে জমাও দেওয়া হয়েছে। সরকার চাইলে এটি কিছুটা বাড়াতে বা কমাতেও পারে। এক্ষেত্রে সরকার কতটা ভর্তুকি দেবে তার ওপর নির্ভর করবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হার।
বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা। গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে ইউনিটপ্রতি ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে আট টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল পিডিবি।
তবে বিইআরসির কারিগরি কমিটি গণশুনানিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ভর্তুকি ছাড়া আট টাকা ১৬ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করে। ফলে সরকার যদি ভর্তুকি দেয়, সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কম বাড়ানো হতে পারে। সরকার ভর্তুকি দিতে না চাইলে দাম কিছুটা বেশি বাড়তে পারে।