ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১লা আশ্বিন ১৪৩১

প্রেমের টানে ইতালির যুবক ঠাকুরগাঁওয়ে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৬ জুলাই ২০২২ ০৪:৫৩:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

প্রেম মানেনা কোন ধর্ম, বর্ণ বা দেশ৷ বাংলাদেশি তরুণীর প্রেমের টানে নিজ দেশ ইতালি থেকে এসে আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে (৩৯) নামে এক যুবক বিয়ে করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গীর এক তরুণীকে।  

বাংলাদেশি এই তরুণী হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের খোকোপাড়া গ্রামের দিনমজুর মারকুস দাসের মেয়ে রত্না রানী দাস (১৯)। গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে মারফুজ দাসের নিজ বাড়িতে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হোন তারা৷ 

প্রতিবেশী জতিন চন্দ্র বলেন, এটি আমার দেখা ব্যতিক্রমী বিয়ে। ইতালির ছেলে আর আমাদের গ্রামের বিয়ে। পাত্রী দেশের আর পাত্র বিদেশের। অনেক আনন্দ ও উল্লাস করেছি বিয়েতে। এখন মেয়েকে বলে জামাই ইতালিতে নিয়ে যাবেন। জামাই অনেক ভদ্র৷ আমরা অনেক খুশি। 

পাত্রকে দেখতে আসা প্রতিবেশী চম্পা খাতুন বলেন, এর আগে বিয়ে দেখতাম নিজ দেশের ছেলে ও মেয়েকে। এবারে ব্যতিক্রমী একটা বিয়ে দেখলাম। দেশের বাইরের পাত্র আর আমাদের এলাকার পাত্রী৷ দেখে অনেক ভালো লাগলো। 

রত্না রানীর বাবা মারকুস দাস বলেন,আমার এক ভাই ইতালি থাকেন৷ তার মাধ্যমেই জামাইয়ের সাথে আমার মেয়ের পরিচিয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর মোবাইলের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়৷ তারপরে জামাই গতকালকে আমাদের বাসায় আসেন৷ সকল আইন মেনে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছি। 

রত্না রানীর মা জানগি দাস বলেন,আমার দেবর তার পরিবার নিয়ে ইতালি থাকে। সেখান থেকে আমাদের প্রস্তাব দেয়। পরে প্রস্তাবের মাধ্যমে আমার মেয়েকে জামাই পছন্দ করে। পরে আমরা ধুমধাম করে এবং আয়োজন করে বিয়ে সম্পন্ন করেছি। আমার জামাই আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে আমরাও যাব৷ 

রত্না রানী বলেন, আমার চাচা ইতালিতে থাকেন৷ সেখানে পরিবার নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন৷ পরে আমার চাচা আমাদের বাড়িতে আমার জামাইয়ের প্রস্তাব দেন। পরে মোবাইলের মাধ্যমে আমরা ইমুতে যোগাযোগ করি৷ একে অন্যের সাথে আমাদের সম্পর্ক হয়। আমরা প্রায় সাত মাস ধরে মোবাইলে কথা বলি। আমার চাচা আমাকে কিছু ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিলেন৷ সেগুলো দিয়ে তার সাথে আমি কথা বলি৷ তারপরে গতকাল আমাদের বিয়ে হয়৷ জামাই হিসেবে তিনি অনেক ভালো মনের মানুষ৷ তিনি সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন৷ তার সাথে আমি আমার চাচা যে ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছেন সেভাবে বলছি। ভাষাগুলো শিখতে আরো সময় লাগবে৷ আমি চেষ্টা করছি। 

আলী সান্দ্রে চিয়ারোমিন্তে বলেন, আমার বউয়ের চাচার সাথে আমার দেশে  একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করি৷ সেখানে দেখেছি বউয়ের চাচা উনারা অনেক সুন্দর করে দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করেন৷ সেখান থেকেই আমি অনুপ্রাণিত হয়ে জোসেফ চাচাকে বলি বাংলাদেশে বিয়ে করার কথা। তিনি আমার বউয়ের বিষয়ে আমাকে প্রস্তাব দেন। আমার অনেক পছন্দ হয়। আগে মোবাইলের মাধ্যমে কথা বলেছি। গতকাল এসে এখানে আয়োজন  করে বিয়ে করেছি। আমার বউ ও তার পরিবার অনেক ভালো। তারা অনেক আন্তরিক ও ভালো মনের মানুষ৷ আমি আমার বউকে আমার দেশে নিয়ে যাব। পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি আমার বউকে আমি নিয়ে যাব। 

চাড়োল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম  বলেন, মেয়েটি চাচা জোসেফ ও ইতালির ছেলেটি একসাথে ইতালিতে একই অফিসে কাজ করতেন৷ মূলত জোসেফ ও তার বউয়ের পারিবারিক দাম্পত্য জীবন দেখে বাঙালি মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন তিনি। গতকাল ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।