ফেনীতে বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় 'উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিদের করনীয়' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উদ্যোগে ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের আয়োজনে জেলা পুলিশ লাইন মিলনায়তনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও সহকারী পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লার সঞ্চালনায় দিন ব্যাপি চলা এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান। এছাড়াও সেমিনারে অংশ নেয় জেলা পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, ফেনীর সকল উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র,কাউন্সিলর,ইউপি চেয়ারম্যানসহ সকল জনপ্রতিনিধিরা। এতে বক্তারা উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান ও এটি নির্মূলে করণীয় বিষয় সূমহ নিয়ে আলোচনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পৃথীবির অন্যসব দেশের তুলনায় জঙ্গিবাদ দমনে আমরা সফল। বাংলাদেশ পুলিশ সবসময়ই স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়েই কাজ করে এসেছে, এবং সর্বক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করেছে।
উগ্রতা ও সন্ত্রাসবাদ বন্ধে তিনি অভিভাবকদের বিশেষ করে মায়েদের সন্তানদের দিকে বিশেষ নজর রাখার আহবান জানান, তাদের আচরণের কোনো পরিবর্তন আসে কিনা সেদিকেও লক্ষ্য রাখার অনুরোধ জানান।
নিজের বক্তব্যে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, আমরা বিগত সময়ে দেখেছি একটি দলের রাষ্ট্রীয় মদদে উগ্রবাদীদের আশ্রয় ও পশ্রয় দেওয়া হয়েছিলো, ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা হয়েছিল । বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে পুলিশ বাহীনির অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আগামীতে আর কোনো সন্ত্রাসবাদ মাথা তুলে দাড়ানোর সাহস পাবেনা।
পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি একে অপরের পরিপূরক হয়ে কাজ করলে দেশে সন্ত্রাসবাদের আর কোনো ঠাঁই মিলবেনা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, হঠাৎ করেই কারো মাঝে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে যেমন কেউ নামাজ পড়তে পড়তে হঠাৎ তার নামাজের তরিকা পরিবর্তন হয়ে গেলে কিংবা হঠাৎ করে সে হালাল হারামের তারতম্য মাফতে শুরু করলে তারদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
উগ্রতা ও সন্ত্রাসবাদ থেকে যুবসমাজ কে মুক্ত রাখতে তাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ সকল সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত করতে জনপ্রতিনিধিদের আহবান জানান তিনি। এবং তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার আহবান জানান। এছাড়াও সেমিনারে আলোচনাগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান।
সেমিনারে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পক্ষ থেকে জনপ্রতিনিদের উগ্রবাদ, উগ্রবাদে জড়িত হওয়ার কারণ, উগ্রবাদে জড়িত হওয়ার প্রক্রিয়া, উগ্রবাদে জড়িত হওয়ার নির্দেশকসূমহ, উগ্রবাদ প্রতিরোধে করনীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে সচিত্র বর্ণনা প্রদান করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।