ঢাকা, রবিবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ই পৌষ ১৪৩১

বছরের শেষ দিনে শান্তিগঞ্জের রনসী গ্রামে যুবক খুন, আটক ৬ : হত্যা মামলা দায়ের

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১ জানুয়ারী ২০২৪ ০৯:৩৪:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় বছরের শেষে দিনে ভেড়ায় মরিচের গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে যুবক খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত যুবকের নাম নাইম মিয়া(১৭)। সে রনসী গ্রামের মো. বশির আলীর ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের রসনী গ্রামে। এঘটনায় নিহত যুবকের পিতা মো. বশির আলী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ অভিযুক্ত নারী-পুরুষ ৮ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা শান্তিগঞ্জ থানায় দায়ের করেছেন।  

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদীর হোসেন জানান, ঘটনার পরপরই থানা পুলিশের অভিযানে অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে ৬জনকে আটক করেছেন। আটকৃতরা হলো উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের রনসী গ্রামের মৃত শমছু মিয়ার ছেলে অজুদ মিয়া(৫৫),তার ছেলে মনছুর হেল্লাজ ফুল মিয়া(৩০), ইমরাউল কয়েছ সুভাস(২৮) ও জাফরুল মিয়া(২৩), একই গ্রামের মৃত আরজ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম(৪৮) ও রফিকুল ইসলাম(৪৫)। 

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার(৩১ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় রনসী গ্রামে প্রতিপক্ষের মরিচ ক্ষেতে নিহত যুবক নাইম মিয়ার চাচাতো ভাই আছকন্দর আলীর ছেলে জাবেল আহমদ ৩/৪টি ভেড়া ঢুকে মরিচ ক্ষেতের ক্ষতি সাধন করে।  এতে প্রতিপক্ষের অভিযুক্ত ইমরাউল কায়েছ, তার মা মোছাঃ ছমিরুন নেছা ও বোন মোছাঃ শান্তনা বেগম নিহত যুবক ও তার পরিবারের লোকজনদেরকে গালমন্দ করতে থাকে। তখন নিহত যুবক  নাইম মিয়া মরিচ ক্ষেতের ক্ষতিপুরণ দেয়ার প্রস্তাব দিলে অভিযুক্তরা তাকে ভয়ভীতি ও প্রাণে হত্যার ভয় দেখিয়ে মরিচ ক্ষেতের পাশ থেকে তাড়িয়ে দেয়।  বশির মিয়া ও প্রতিপক্ষের লোকজনদের মধ্যে বসত বাড়ীর জায়গা নিয়া দ্বন্ধ ও পূর্ব বিরোধ থাকায় গত রবিবার(৩১) বিকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় প্রতিপক্ষের অভিযুক্ত অজুদ মিয়া, ফুল মিয়া, জাফরুল মিয়া, ইমরাউল কয়েছ, রফিকুল মিয়া ও সুফিকুল মিয়া, মোছাঃ সান্তনা বেগম ও মোছাঃ ছমিরুন নেছাগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র রামদা, সুলফি, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি ইত্যাদি নিয়ে মামলার বাদী বশির মিয়ার বসত বাড়ীর সামনে খালি জায়গায় আসিয়া তাকে ও তার পরিবারের লোকজনদেরকে মারপিট করার জন্য ডাকাডাকি ও গালমন্দ শুরু করে। তখন বশির মিয়া, তার ছেলে নিহত নাইম মিয়া, স্ত্রী রানা বেগম ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী করিমুন নেছা প্রতিবাদ জানালে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সুলফি সহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়া তাদেরকে মারপিট শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের সুলফির আঘাতে নিহত যুবক নাইম মিয়া সহ করিমুন নেছা, রানা বেগম ও বাদী বশির মিয়া আহত হয়। পরে মারপিটে আহতদেরকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়া গেলে ডাক্তার নিহত যুবক নাইম মিয়াকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষনা করেন। 

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রনসী গ্রামে মারামারির ঘটনায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে।  অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।  তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে চালান দেয়া হয়েছে।