ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাঁশখালী হাসপাতালে রোগী সেবা বেড়েছে, প্রতি মাসে চিকিৎসা নিচ্ছে অর্ধলক্ষাধিক রোগী

শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০৫:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

বাঁশখালী হাসপাতালে বিগত কয়েকমাসে রোগীসেবা আশানুরূপভাবে বেড়েছে। ডাক্তার উপস্থিতি, বিনামূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা ও ফ্রি ঔষধ সরবরাহের মাধ্যমে রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে সরকারী এই হাসপাতাল। দালাল ও ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের দৌরত্মও কমেছে আগের চেয়ে। নিয়মিত পরিচ্ছন্ন অভিযানের ফলে আগের মত নোংরা ও স্যাতস্যাতে পরিবেশ আর নেই। অনেকটা ঝকঝকে তকতকে বাঁশখালী হাসপাতাল। বিগত দিনের চেয়ে এই হাসপাতালের চিত্র এখন অনেক পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি। এর ফলে সরকারী হাসপাতালে বেড়েছে রোগী সেবা। সরকারী হাসপাতালের এই অগ্রযাত্রায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো অনেকটা রোগী শুন্য হয়ে পড়েছে। সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ এখন সরকারি হাসপাতালের দিকেই ঝুঁকে পড়েছে। এতে করে সরকারী হাসপাতাল এখন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তারা এখন বিভিন্ন কৌশলে সরকারী ৫০ শয্যার একমাত্র এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে রোগী টানার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ মার্চ বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও হাসপাতালের প্রধান হিসেবে যোগদেন ডাক্তার সব্যসাচী নাথ। তিনি যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। তাছাড়া সাবেক এমপি আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান সিআইপি নির্বাচিত হওয়ার পর পরই চিকিৎসাখাত নিয়ে নিজস্ব পরিকল্পনা গ্রহণ ও নিজস্ব তহবিল থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, রোগীর বিছানার জন্য ফোম ও বেডশিট প্রদান করেন। হাসপাতালের পরিবেশ ও চিকিৎসা সেবার আমুল পরিবর্তন আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর পরই পাল্টে যেতে শুরু করে বাঁশখালী হাসপাতালের চিত্র। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সেবার মান আরো বেড়েছে। সম্প্রতি বাঁশখালীর কৃতি সন্তান এই হাসপাতালের এক সময়ের জনপ্রিয় চিকিৎসক ডাক্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন নিযুক্ত হওয়ায় তার দিকনির্দেশনায় প্রতিনিয়ত বাঁশখালী হাসপাতালের সেবার মান বেড়েই চলছে। বৃদ্ধি পেয়েছে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা।

বাঁশখালী হাসপাতাল সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের মধ্যে গত তিন মাস ধরে সর্বোচ্চ ইউজার ফি সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর এখন এক্সরে মেশিন নিয়মিত চালু হয়েছে। তাছাড়া প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর এখন আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নিয়মিত চালু হয়েছে। হিমোফিলিয়া সনাক্তকরণে চট্টগ্রামের মধ্যে প্রথম হওয়ার পাশাপাশি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১২টি প্যাথলজিকাল পরীক্ষা করা হয়।

হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সাফল্য সিজার ডেলিভারী নিরোৎসাহিত করে বিগত দুই মাসে গড়ে ১০০ জনের অধিক বিনামূল্যে সফলভাবে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে।

 

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বাঁশখালী হাসপাতালে বেড অকুপেন্সী রেইট ১৪০ শতাংশ। দৈনিক আউটডোর রোগী গড়ে ৬০৫ জন। প্রতিদিন ছুটির দিন ছাড়া ৭৬৫ জন রোগী নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বাঁশখালী হাসপাতালে ডাক্তার চিকিৎসকের ৩৫টি পদ থাকলেও বর্তমানে নিয়মিত ডাক্তার আছেন ২২জন। কনসালটেন্টসহ ডাক্তার চিকিৎসকসহ বর্তমানে ৭টি পদ খালি আছে। তাছাড়া সংযুক্তিতে ৪জন, ১জন অনুপস্থিত এবং ১জন সরকারি চাকরি হতে অব্যহতি নিয়েছেন। এসব শুন্য পদ পুরণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সব্যসাচী নাথ।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার জানান, বাঁশখালী হাসপাতালে সেবার মান আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ এখন সরকারী হাসপাতালমুখী হচ্ছে।

 

বায়ান্ন/এসএ