বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের নতুন বাজার সংলগ্ন এলাকায় সোমবার রাতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মোহাম্মদ ওসমান (২০) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। নিহত কিশোর সরল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মঞ্জুর বর বাড়ি এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে নিহতের বড় ভাই রিদোয়ানুল হক মানিক মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে মাহমুদুল্লাহ নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে বেশকিছু অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, কয়েকদিন পূর্বে কিশোর ওসমান তার চাচা শহিদুল ইসলামের বসতঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে। চোরাইকৃত স্বর্ণ ও টাকা পাশের অন্য একটি বাড়িতে জমা রাখেন। বিষয়টি জানাজানি হলে চাচা শহিদুল ইসলামসহ তাকে ধরে জিজ্ঞসাবাদ করার একপর্যায়ে চুরির কথা স্বীকার করে এবং চোরাইকৃত স্বর্ণ ও টাকা ফিরিয়ে দেয়। এসময় চুরির অভিযোগে কিশোর ওসমানকে চাচাসহ স্থানীয় কয়েকজন গণপিটুনী দেন। বেধড়ক মারধরের কারণে একপর্যায়ে অপমান সহ্য করতে না পেরে সেখানে উপস্থিত তার বড় ভাই রিদোয়ানুল হক মানিকও ছাড়িয়ে নেয়ার পরিবর্তে নিজ হাতে ভাইকে মারধর করে। মারধরের পর রাতেই গণপিটুনির শিকার ওসমানকে বাঁশখালী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলমগীর চৌধুরী জানান, কিশোর ওসমান তার চাচা শহিদুল ইসলামের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকা চুরি করে পাশ্ববর্তী এক বাড়িতে রাখেন। বিষয়টি জানাজানি হলে চুরিকৃত স্বর্ণ ও টাকা ফেরৎ দেন। এসময় কিছু লোক আইন হাতে তুলে নিয়ে কিশোর ওসমানকে মারধর ও গণপিটুনি দেন।
নিহতের মা রাবেয়া বেগম জানান, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মারধর করে রাতের আঁধারে বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্থানে খুনিরা ছেলেকে ফেলে গেছে। পরে তার আর্তচিৎকার শুনে আমরা আহত ছেলেকে উদ্ধার করে আমি ও আমার বড় ছেলে মোঃ মানিকসহ হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে ডাক্তার ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাঁশখালী থানা ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই জনকে আটক করা হয়েছে।
বায়ান্ন/এসএ