ঢাকা, বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯শে কার্তিক ১৪৩১

বিদ্যুত বিল বাঁচাতে লন্ডনে সিনিয়র সিটিজেনরা সারাদিন বাসে ঘুরে বেড়ান

এমএ রহিম, সিলেট: | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১২ মে ২০২২ ০৭:৫৪:০০ পূর্বাহ্ন | আন্তর্জাতিক

বিদ্যুত বিল বাঁচাতে যুক্তরাজ্যের সিনিয়র সিটিজেনরা এখন ঘরে থাকেন না। বাসে চড়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ান। কারণ ঘরে থাকলে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৮০ পাউন্ড বিদ্যুত বিল গুণতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পূর্বে ওই বিলের পরিমাণ ছিল ১৭ পাউন্ড। বর্তমানে যার পরিমাণ দাড়িয়েছে কমপক্ষে ৮০ পাউন্ড। এই বিদ্যুত বিল বাঁচাতে তাঁরা ঘর ছেড়ে বাসে ঘুরে বেড়ান। বাসে হিটার থাকায় সিনিয়র সিটিজেনরা ওই সুযোগ বেছে নিয়েছেন। বাসে ভ্রমণ করতে সিনিয়র সিটিজেনদের কোনো ধরণের অর্থ দিতে হয়। তাই তাঁরা এই পথ বেছে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অনেক সিনিয়র সিটিজেন বিনামূল্যের খাবার সংগ্রহ করতে বিভিন্ন সংস্থার দফতরে গিয়ে হাজির হন। ওইসব সংস্থা বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করে। 

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যুক্তরাজ্যে সৃষ্ট নাজুক অবস্থার কথা দৈনিক বায়ান্নের কাছে ওইভাবে তুলে ধরছিলেন লন্ডনের কিংসটন শহরের ব্যবসায়ী ও সিলেটের শেরপুরের আল-সৈয়দ শপিং কমপ্লেক্সের মালিক সৈয়দ সাজিদ উদ্দিন কামরান। ১১ মে বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায় যখন কথা বলছিলেন তখন সেখানে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। সিলেটেও একইভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছিল।  

 

সৈয়দ কামরান জানাচ্ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রায় সর্বত্র অশান্তি দেখা দিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যত স্থায়িত্ব হচ্ছে ওই অবস্থা ততই প্রকট হচ্ছে। যুদ্ধ ও বৃটেনের সার্বিক অবস্থা নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টে আলোচনা শুরু হয়েছে। তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আলোচনায়। জিনিসপত্রের বৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ করা হচ্ছে সংসদে। 

 

সৈয়দ কামরান জানান, যুদ্ধের প্রভাবে বৃটেনের মাটিতে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম কমপক্ষে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শিশু খাদ্য থেকে শুরু করে সব ধরণের খাদ্য পণ্য ক্রয়ে এখন তিনগুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। বর্তমানে প্রতিলিটার ডিজেলের দাম এক পাউন্ড ৮৬ পেনি, পেট্রল ও অকটেন প্রতি লিটার এক পাউন্ড ৭০ পেনি। ২০ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৪৫ পাউন্ড। যুদ্ধের পূর্বে যা অর্ধেকেরও কম ছিল। 

 

সৈয়দ কামরান বলেন, ব্যাংক ইন্টারেস্টও বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসা বা ব্যক্তিগতভাবে যেভাবেই ঋণ নেয়া হয় না কেন তাতে ইন্টারেস্ট বেশি ধরা হচ্ছে। যার পরিমাণ শতকরা একভাগ। 

 

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে চারদিকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশটির নাগরিকরা বলতে গেলে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। আগামী দিনগুলো কেমন হবে-তা নিয়ে অনেকে সংশয়ে আছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ না হলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে জানালেন সৈয়দ কামরান।