ঢাকা, শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিদ্যুৎহীন লক্ষ্মীপুরের অনেক ইউনিয়ন, চরম বিপাকে জনগন।

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১১:২১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
 ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়ো বাতাসে লক্ষ্মীপুরে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এখনো অনেক ইউনিয়ন ।
 
বুধবার (২৬ই অক্টোবর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের অনেক ইউনিয়নেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি। 
 
এদিকে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতেও গতকাল (মঙ্গলবার)  অন্ধকারে বিচারকার্য চালাতে দেখা গেছে। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), জসিম উদ্দিনের কক্ষে মোমবাতি জ্বলতে দেখা যায়। চকবাজার মসজিদ মার্কেট, তমিজ মার্কেট, হকার্স মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেটে ব্যবসায়ীদের ক্রেতা শূন্য অন্ধকার দোকানে বসে থাকতে দেখা গেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন পুরো জেলাতেই একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
 
পিডিবি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঝোড়ো বাতাসে নোয়াখালী থেকে লক্ষ্মীপুরের বিদ্যুতের ৩৩ কেভি সংযোগ তারের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সদর উপজেলার জকসিন এলাকায় বিদ্যুতের টাওয়ার হেলে পড়েছে। শহরের সমসেরাবাদ এলাকায় পানির ট্যাংকির সামনে পিলার ভেঙে গেছে। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। রামগঞ্জ গ্রিড থেকে পিডিবি কার্যালয়ে সংযোগ নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা করছেন পিডিবির কর্মকর্তারা।
 
টেলিকম ব্যবসায়ী কামাল হোসেন রাজু বলেন, আমাদের পুরো কাজ বিদ্যুতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মোবাইলে চার্জ নেই। চার্জ থাকলেও নেটওয়ার্ক নেই। ফটোস্ট্যাট মেশিন চালাতে পারছি না। এজন্য লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছেন।
 
বিদ্যুৎ বিভাগের অভিযোগ কেন্দ্রে কর্মরত মো. সোহেল বলেন, জকসিন এলাকায় বিদ্যুৎতের টাওয়ার ভেঙে গেছে। নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ স্যারসহ জকসিনে পিডিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে আমরা চেষ্টা করছি। তবে কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
 
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতির আওতায় প্রায় ৫০ ভাগ গ্রাহককে বিদ্যূৎ সরবরাহ করা হয়েছে বলে আজ বিকালে নিশ্চিত করেছেন পবিস রায়পুর এর ডিজিএম শাহাদাত হোসেন।বিদ্যূৎ নিয়ে আলাপকালে তিনি জানান, ঘূর্নিঝড়, বৃষ্টি, বাতাসের কারনে প্রায় কয়েক লাখ টাকার তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রায় ৫০টি মিটার পুঁড়ে গিয়েছে, ২শতাধিক মিটার গাছ উপড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২শতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ে পড়েছে, ৫০টির মতো ভেঙ্গে গিয়েছে।গাছ ভেঙ্গে, উপড়ে পড়ে, হেলে পড়ে বহু এলাকায় এখনো জনগনের অসহযোগিতার কারনে, পবিস এর লোকবল অপ্রতুলতার ৫০ ভাগ বিদ্যূৎ সরবারহ করা যাচ্ছে না।কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রশ্নের জবাবে ডিজিএম শাহাদাত হোসেন বলেন, এখনি ক্ষয়ক্ষতির পূর্নাঙ্গ লিষ্ট পাইনি, অনেক এলাকার সাথে যোগাযোগ এখনো করা সম্ভব হয়নি ভিতরে হওয়ায়। লাইন পুুরোপুরি চালু করতে হলে সব লাইন চেক করতে হবে। তবে আমাদের সব গুলো ফিডার চালু করেছি। আগামীকালের মধ্যে সমাধান হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
 
লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙে পড়েছে। তা ঠিক করা হচ্ছে। ঠিক হলেই দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করা হবে। লক্ষ্মীপুর বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে।
 
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ঝড়ো বাতাসের কারণে বিদ্যুৎ লাইনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় লাইনের ওপর গাছ আছে। সেগুলো পুরোপুরি অপসারণ করা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা যাবে। প্রায় জেলা জুড়ে ঝড়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ এর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ৩৬৫ টি খুঁটি ভেঙ্গে  ৪৫০ স্থানে ছিঁড়ে গেছে সঞ্চালন তার।তারের উপর গাছ কাটা এখনো চ্যালেঞ্জ। জনগন গাছ কাটে সহযোগিতা করলে দ্রুত বিদ্যূৎ দেয়া সম্ভব। পৌরসভা গুলোতে লাইন সরবারহ স্বাভাবিক হচ্ছে। ইউনিয়নে ২৪ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।