সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, টেনেহিঁচড়ে নরমাল ডেলিভারি করার চেষ্টাকালে দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটি ঘেরাও করে রাখেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে সন্তান জন্মের প্রসব ব্যথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন বিয়ানীবাজারের কুড়ারবাজার ইউনিয়নের বৈরাগী গড়রবন্দ এলাকার আইসক্রিম বিক্রেতা অহিদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা বেগম। সন্ধ্যায় তাকে লেবার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। দায়িত্বশীল দুই নার্সের সঙ্গে একজন চিকিৎসকের সহায়তায় মৃত নবজাতকের জন্ম হয়।
ডেলিভারির দায়িত্বে ছিলেন হাসপাতালের নার্স লাকী আক্তার ও সুজালা কস্তার। তারা জানান, প্রসবের সময় শিশুর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
তবে ভুক্তভোগী পরিবার মরদেহ বাড়ি নিয়ে দাফনের সময় দেখতে পান নবজাতকের দেহ থেকে মাথা অনেকটা আলাদা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী রাতে হাসপাতাল ঘেরাও করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
মৃত নবজাতকের বাবা অহিদুর রহমান বলেন, প্রসবের জন্য নার্সরা (লাকী ও সুজালা) পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। আমরা নিরুপায় হয়ে তাদের শেষ পর্যন্ত দুই হাজার টাকায় রাজি করাই। কিন্তু সন্ধ্যাবেলা তারা জানায় বাচ্চা বড় হওয়া স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে না। এরপর সন্ধ্যার পর বাচ্চার প্রসব হলেও সে মারা গেছে জানিয়ে একটি কাপড়ে দিয়ে পেঁচিয়ে মরদেহ আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে নবজাতকের মরদেহ দাফন করার সময় দেখা যায়, তার মাথা ঘাড় থেকে আলাদা। বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে তারা এলাকার মানুষকে জড়ো করে হাসপাতালে ছুটে আসেন।
এলাকাবাসীরা জানান, এমন মর্মান্তিক ঘটনা গ্রামের একটি হোয়াটসআপ গ্রুপে দেখে তারা জড়ো হয়ে হাসপাতালে এসে দায়িত্বশীলদের কাছে এর কারণ জানতে চান এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহরিয়ার হোসেন শুভ জানান, অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।