যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার দৌলতপুর গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় উভয় পক্ষের ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছেন, দৌলতপুরের সিদ্দিক সরদার (৬৫), তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬০), পুত্র শাওন সরদার (২০), আমিনুর রহমানের স্ত্রী রেখা খাতুন (৩৫), তার পুত্র রাসেল হোসেন (২৪), বেনাপোল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান সরদারের পুত্র বজলুর রহমান (৫৫), আরিফুল ইসলামের স্ত্রী রুমা খাতুন (৩৫), তার বোন রিমা খাতুন (৩০) মা রেহেনা বেগম (৫৫), গাতিপাড়া গ্রামের মালেকের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে আরফিনা খাতুন (২০)।
আহত সিদ্দিক সরদার জানান, দৌলতপুরের সাহেব আলীর পুত্র আরিফুল ইসলাম ডিনার ও গাতিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের পুত্র অনিক মাদক সম্রাট। তারা প্রতিরাতে ভারত থেকে ফেনসিডিলের চালান আনে। আমার বাড়ির সামনে লাইট পোস্ট থাকায় ওই মাদক ব্যবসায়ীদের ফেনসিডিলের চালান আনতে অসুবিধা হয়। এ কারণে আরিফুল গং পিলারে থাকা পল্লী বিদ্যুতের মিটার ও লাইট ভেঙ্গে দিয়ে সেখানে অন্ধকার করে ফেলে। তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এতে মাদক ব্যবসায়ীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রোববার রাত ৭টার দিকে সিদ্দিক সরদার তার বাড়িতে বসেছিলেন। এ সময় মাদক সম্রাট আরিফুল, অনিক ও তাদের সহযোগি মামুন ধারালো অস্ত্র, রড, জিআই পাইপ নিয়ে সিদ্দিক সরদারের বাড়িতে হামলা চালায় এবং তাকে কোপায়। এ সময় হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য বাড়ির সকলে এগিয়ে আসেন। তখন মাদক ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রহমান, শাওন হোসেন, রাসেল হোসেন, আলেয়া বেগম ও রেখা খাতুনকে বেদম প্রহার করে ও কোপায়। এতে তারা আহত হলে সিদ্দিক সরদার, শাওন হোসেন ও রাসেল হোসেনকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বজলুর রহমানকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের অভিযোগ, সীমান্তবর্তী এ গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের আধিপত্য বিস্তারের ফলে সাধারণ মানুষ অসহায়।
আরিফুল ইসলাম বলেন, রেখার বাড়ি গত এক সপ্তাহ আগে কে বা করা মিটার ভাংচুর করেছে। এই ভাংচুর এর ঘটনাটি সে আমার উপর চাপিয়ে দিয়ে আমার বাড়ি এসে ঘরের জানালাসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ সময় রেখার সাথে ছিল সামাউল, আমিনুর, রাছেলসহ আরো একদল দুর্বৃত্ত। আমি এসময় বাড়ি ছিলাম না। আমার পরিবারকে মারধর করার সময় গাতিপাড়া গ্রামের রাবেয়া ও তার কন্যা আরফিনা বাধা দিলে তাদেরও মারধর করে। আরফিনাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
দৌলতপুর গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য তৌহিদুর রহমান বলেন, রেখার বাড়ির একটি মিটার ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে রাতের আঁধারে কে বা কারা ওই মিটার ভেঙ্গেছে তা কেউ জানে না। এছাড়া রেখার পরিবার স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার না দিয়ে আরিফুলের বাড়ি ভাংচুর ও তার পরিবারসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে শুনেছি।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার এএসআই মাসুম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।