ঢাকা, মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১
বিদ্যুৎ সংকট

ব্যবহারকারীর অপচয়, রাষ্ট্রের খাতায় চাহিদা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৭ অগাস্ট ২০২২ ০৯:২৬:০০ পূর্বাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

 

মাস চারেক আগে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয় সরকার। সেই উৎসবের আমেজ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এরই মধ্যে প্রকট হয় বৈশ্বিক সংকট। পাল্টে যায় অনেককিছু। টাকার অবনমন ও ডলারের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় সংকট ঘনীভূত হয় আরও। কৃচ্ছ্রসাধনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডলার বাঁচাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশভ্রমণ কমানোসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারেও আসে বেশকিছু নির্দেশনা। বিদ্যুতের অপচয় রোধের পাশাপাশি শিডিউল লোডশেডিং চলছে। আলোকসজ্জা না করাসহ আরও কিছু নির্দেশনা থাকলেও তা কাজে আসছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সরকারের জন্য যেমন বড় চ্যালেঞ্জ তেমনি সব ধরনের গ্রাহক পর্যায়ে অপচয় বন্ধ করাও চ্যালেঞ্জ। সরকারের দায়িত্ব যেমন শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়ন করা তেমনি জনগণেরও দায়িত্ব বিদ্যুতের অপচয় না করা।

 লাইট যত বেশি থাকে, কাস্টমার তত তাড়াতাড়ি কাপড় পছন্দ করে। চোখের সামনে চকচক করলে একবার দেখেই যেমন কাপড়ের ভালো-খারাপ বোঝা যায়, তেমনি চকচকে আলোয় কাপড় পছন্দও হয় বেশি। 

প্রশ্ন থেকে যায়, দেশে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ অপচয় হয়? এর কোনো হিসাব আছে কি? একজন গ্রাহক যদি মাসে এক হাজার টাকার বিদ্যুৎ খরচ করেন তাহলে তিনি এক হাজার টাকাই বিল দেবেন। তবে তার বাস্তবিক প্রয়োজন যদি হয় ৫শ টাকার, তাহলে বাড়তি খরচ করা ৫শ টাকা তিনি দিলেও এর চাপ গিয়ে পড়ে অন্য গ্রাহকের ওপর। খরচটা এক গ্রাহকের ওপর পড়লেও সামগ্রিকভাবে অপচয়ের দায়ভার সবার ওপরেই বর্তায়। সরকারের উৎপাদন সক্ষমতা যতটুকু ততটুকু বিতরণে সমন্বয় করতেই লোডশেডিং করছে। আর সেই লোডশেডিংয়ের ভুক্তভোগী সবাই।

রাজধানীর অভিজাত শপিংমল বা মার্কেটগুলোতে প্রবেশ করলে এখনো চোখে পড়ে নানা রঙের বাতি। প্রায় প্রতিটি শপিংমলেই এসিও চলছে আগের মতোই। রাজধানীর বেশ কয়েকটি শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, বাহারি বাতির আলোয় চকচক করছে বিভিন্ন পণ্যের শোরুম। পণ্যের প্রদর্শনীতে কোনো প্রকার ঘাটতি না রাখতে সর্বোচ্চ আলোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এসব শোরুমে।

বসুন্ধরা শপিংমলে একটি কাপড়ের শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, এলইডি লাইটের চোখ ধাঁধানো আলোয় চকচক করছে পুরো শোরুম।

ওই শোরুমের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, দৈর্ঘ্যে ৩০ ফুট ও প্রস্থে ২০ ফুটের দোকানটিতে এলইডি লাইট আছে ১৫টিরও বেশি। এছাড়া শোরুমে বাড়তি সৌন্দর্যের জন্য রাখা হয়েছে রঙিন বাতি। গ্রাহক যখন বেশি থাকে তখন সেগুলোও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

এত বেশি লাইট কী কারণে জ্বালাতে হয়, এমন প্রশ্ন করলে ওই বিক্রয়কর্মী বলেন, লাইট যত বেশি থাকে, কাস্টমার তত তাড়াতাড়ি কাপড় পছন্দ করেন। চোখের সামনে চকচক করলে একবার দেখেই যেমন কাপড়ের ভালো-খারাপ বোঝা যায়, তেমনি চকচকে আলোয় কাপড় পছন্দও হয় বেশি। এ কারণেই এত বেশি লাইট জ্বালিয়ে রাখা হয়।

একই মার্কেটের ভেতর একটি গয়নার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতি এক ফুট দূরত্বে একটি করে এলইডি লাইট জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। আবার অধিকাংশ গয়নার ওপর আলাদা করে লাইট বসানো।