ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভাঙচুর না হওয়া পোশাক কারখানাও বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০২:১১:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

সরকারনির্ধারিত মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে ঢাকা ও গাজীপুরের যেসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ভাঙচুর না হওয়া কারখানাও রয়েছে। মোট ১৪৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।

তাঁরা কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রেখে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পর কারখানা ত্যাগ করে বাইরে চলে যান। নিরুপায় হয়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৫ নভেম্বর কাজে যোগ দিয়ে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকেরা কাজ করেন। ৭ নভেম্বর বেতন দেওয়া হলে ৮ নভেম্বর থেকে তাঁরা আবারও কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’

 

এসপি সারোয়ার আলম বলেন, ‘ওই সব কারখানার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং থাকবে।’ 

 

পুলিশ জানায়, কারখানা ভাঙচুর, বিক্ষোভ, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মোট পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে।

 

উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করা হবে

গাজীপুর নগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় শ্রমিকদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত তুসুকা কারখানা পরিদর্শনে যান শিল্প পুলিশের ডিআইজি জাকির হোসেন খান। এ সময় তিনি জানান, গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভে ১২৩টি কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা করা হয়েছে ২২ টি। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮৮ জনকে। মোট ১৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

 

ডিআইজি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে একটা গ্রুপের উসকানি রয়েছে। তারা উসকানি দিচ্ছে আন্দোলন করার জন্য। যারা উসকানি দিচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তাদের খুঁজে বের করা হবে।’

 

সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা এ ধ্বংসাত্মক কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, যেসব শ্রমিক এবং ওই শ্রমিকদের সঙ্গে যেসব বহিরাগত যুক্ত ছিল, তারাই আতঙ্কিত হবে এবং তাদের আমরা গ্রেপ্তার করব।’

কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার নোটিশ দেখে ফিরে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা

সরকারনির্ধারিত মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে ঢাকা ও গাজীপুরের যেসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ভাঙচুর না হওয়া কারখানাও রয়েছে। মোট ১৪৭টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।

 

 

শিল্প পুলিশ কারখানা ভাঙচুর ও বন্ধের যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ভাঙচুর হওয়া ১২৭টির বাইরেও ২০টি কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে।

 

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া শ্রমিক বিক্ষোভের মধ্যে গতকাল শনিবার পর্যন্ত অন্তত ১২৭টি কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরেই রয়েছে ১২৩টি। এসব ঘটনায় মোট মামলা হয়েছে ২৭টি। পুলিশ ইতিমধ্যে ৯২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে ক্ষতিগ্রস্ত একটি কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে শিল্প পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জাকির হোসেন খান বলেছেন, শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে একটা গ্রুপের উসকানি রয়েছে। তাদের খুঁজে বের করা হবে। 

 

সাভারে ১৩০ কারখানা বন্ধ

সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে ১৩০টি পোশাক কারখানা গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, যেসব কারখানার শ্রমিকেরা কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে কাজ করেন না, শ্রম আইন অনুযায়ী ওই সব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

সকাল ৮টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া, ছয়তলা, নরসিংহপুর ও কাঠগড়া এলাকার এআর জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড, ডুকাটি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড, ক্রসওয়্যার লিমিটেড, ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড, টেক্সটাউন লিমিটেড, অরনেট নিট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ শতাধিক পোশাক কারখানার গেটে বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে। নোটিশে বন্ধের কারণ হিসেবে শ্রমিকদের কাজ না করে বসে থাকা ও ভাঙচুর করাসহ বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

 

কাঠগড়া এলাকার আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকেরা কারখানায় এসে ফেস পাঞ্চ করেন।