দেশে এখন চিনির দাম আকাশচুম্বী। এই পণ্যটি নিজের রেকর্ড নিজেই প্রতিনিয়ত ভাঙছে। বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও সরকার ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছে। এক কথায় নিয়ন্ত্রণহীন চিনি। এ অবস্থায় উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে দেশীয় খুচরা বাজারের চেয়ে কেজিতে অন্তত ৬০ টাকা কমে চিনি আনছে সরকার। ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকায় সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার (১৭ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি থেকে এই চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক কোম্পানি এক্সেনচুয়াল টেকনোলজি ইনকরপোরেশন (স্থানীয় এজেন্ট ওএমজি লিমিটেড) থেকে এ চিনি কেনা হবে। এতে খরচ হবে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। প্রতিকেজি চিনির দাম পড়বে ৮২ টাকা ৮৫ পয়সা।
যেসব দেশ বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা হবে না বলে দুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বাংলাদেশের র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে, সেই দেশের কোম্পানির কাছ থেকে চিনি কেনার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অতিরিক্ত সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে পৃথকভাবে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
প্রধানমন্ত্রী বলার পরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনি আমদানি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের লঙ্ঘন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমি রাখি না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ওই চিনি কেনা হচ্ছে বলে জানান সাঈদ মাহবুব খান।
তিনি বলেন, একই বৈঠকে কর্ণফুলী সার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ৩০ হাজার টন ব্যামেগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) এই সার কেনা হবে। এ ছাড়া সৌদি আরব থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে।’ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তিতে সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার কিনবে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের জন্য (বিএডিসি) কেনা হবে এ সার। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার কেনা হবে। কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকেও ৫০ হাজার টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিএডিসির জন্য ২২৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন এমওপি সার কেনা হবে বলে যোগ করেন অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান।