বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাষ্ট্রপতি তো শেখ হাসিনারই দেওয়া। রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন, যুবলীগ করতেন। শেখ হাসিনা মনোনীত রাষ্ট্রপতির কণ্ঠের সুর ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব পালনের চাইতে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালনে বেশি ইচ্ছুক। প্রথম দিকে ছাত্র-জনতার যে উত্তাল যে রূপ, সে সময় কিছু বলেন নি। কিন্তু এখন ক্রমান্বয়ে শেখ হাসিনার অনুগামি হয়ে কথা বলছেন। কোন ধরনের চক্রান্তের সঙ্গে তিনি আছেন কিনা দেখতে হবে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে শহীদদের পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহয়তা প্রদান অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় তাদের প্রতি বিএনপি চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন তিনি।
এদিন গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে সাভার এবং আশুলিয়ায় ৭টি শহীদ ও ৩টি আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দল। প্রথমে সাভারে ব্যাংক টাউনে শহীদ ইয়ামিনের বাসায় শহীদ ইয়ামিন, শহীদ নাফিসা হোসেন ও আহত ইসমে আজমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর আশুলিয়ার কালার টেকের কাইচা বাড়িতে শহীদ মামুন বিপ্লবের বাসায় শহীদ মামুন বিপ্লব, শহীদ আব্দুস সাবুর, শহীদ সাজ্জাদ, শহীদ বাইজিদ এবং আহত হান্নান ও আকাশ মিয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রিজভীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, রাষ্ট্র চালাতে বর্তমান সরকারের যে সংস্কার করা দরকার তা দ্রুত শেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচিত সরকার পুরো রাষ্ট্র সংস্কার করবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার যে ছাত্র-জনতার উপর গুলি করেছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। অপরাধীরা সব পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দোসররা দেশে আবারও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি। এই যে মুক্তির সুবাতাসের মধ্যে আমরা রয়েছি, এটা যাদের জন্য তাঁদের পাশে আমাদের থাকতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সহায়তা দেওয়া, তাঁদের পাশে থাকা এবং খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্যই ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ নামে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।
দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ না খেয়ে থাকে এমন যেন না হয়। মানুষ যাতে দু’মুঠো খেতে পারে এজন্য বাজার সিন্ডিকেট ও মার্কেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা অল্প কিছু ড্রাইভ দেখতে পাচ্ছি কিন্তু ব্যাপক ড্রাইভ দেখতে পাচ্ছি না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খোন্দকার আবু আশফাক, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনসহ আরও অনেকে।
বায়ান্ন/একে