ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রোহিঙ্গা বিষয়ে এই প্রথম সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস জাতিসংঘে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৮ নভেম্বর ২০২১ ০২:৪৪:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার বিষয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উপস্থাপিত একটি প্রস্তাব বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘জাতিসংঘে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে।

প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা, এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সকল মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানোর কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, জাতিসংঘে এবারই প্রথম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজুলেশন, যা এই সঙ্কটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, থার্ড কমিটির অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবে সাধারণ পরিষদকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নাগরিকদের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার প্রতি পূর্ণ সম্মান দেখাতে দেশটির নিরাপত্তা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি যেন আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তর, আইনের শাসন নিশ্চিত করা এবং জরুরি অবস্থার অবসানের আহ্বান জানানোর কথা বলা হয়েছে সেখানে।

প্রস্তাব পাসের প্রক্রিয়ার সময় মিয়ানমারের প্রতিনিধি বলেন, সামরিক জান্তার দমন-পীড়নে দেশের সব নাগরিককে যে ভুগতে হচ্ছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। অভ্যুত্থানের আগে ও পরে সেনাবাহিনীর চালানো সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিবরণও তিনি বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মিয়ানমারের প্রতিনিধি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। হাজারো বেসামরিক নাগরিক ঘারবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। মার্টিন লুথার কিংয়ের বক্তব্য থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, কোথাও যদি অবিচার হয়, তা সুবিচারের প্রতি হুমকি তৈরি করে সব জায়গায়। আমরা সুবিচারের জন্য লড়ছি।

রাবাব ফাতিমা বলেন, এবারের প্রস্তাবটি নিজভূমি মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, যা দীর্ঘস্থায়ী এই সমস্যার টেকসই সমাধানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একটি শক্তিশালী ম্যান্ডেট নিয়ে এবারের প্রস্তাব গৃহীত হলো, যা রোহিঙ্গাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করবে। যে জন্য তারা পথ চেয়ে বসে আছে।

বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন জানিয়েছে, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এবারের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১০৭টি দেশ সমর্থন দিয়েছে।