লক্ষ্মীপুরে আওয়ামীলীগ - বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশে নেতাকর্মীদের রাজপথে প্রতিরোধের ঘোষণা নিয়ে ক্রমশঃ উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক ময়দান। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১১ জুন) বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি লক্ষ্মীপুরে তার বাসভবন প্রাঙ্গণে জেলা বিএনপির উদ্যোগে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
'গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং মূল্য হ্রাসের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে এ্যানি বলেন, বিএনপির একজন নেতাকর্মী যদি কোথাও হামলার শিকার হয় সঙ্গে-সঙ্গে পাল্টা হামলা করা হবে।
বহু হামলার শিকার হয়েছি এবার হবে প্রতিরোধ, গত ১৫ বছর আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে আওয়ামী লীগ এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দিন দিন আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে। তাই তারা এখন অনুতপ্ত সুরে কথায়-কথায় বিএনপির বদনাম করে বেড়াচ্ছে। লাভ নেই, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের দুর্নীতির কথা জেনে গেছে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'মাইরের উপর ওষুধ নাই।'
এ্যানি আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার ইচ্ছে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অসুস্থ ছিলেন তখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠালেন। তখন আর সমস্যা ছিল না।
সমাবেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে ভয় পায়, তাই তারা ভোট ডাকাতির মধ্যে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে।
এ সমাবেশে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুউদ্দিন সাবুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ বেপারী, অ্যাডভোকেট হাফিজ, রাব্বি এলাহী জহির, আবু সাহেদ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম লিটন, সদস্য সচিব আব্দুল হালিম হুমায়ুন ও কৃষকদল নেতা আমির হোসেন চাষীসহ প্রমুখ।
এদিকে তার এ কথার জবাবে সন্ধ্যার পর রাতে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ আহমদ পাটোয়ারী বলেছেন, আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মীকে মারলে বিএনপির দশ নেতাকর্মীকে ধরে এনে ধোলাই দেয়া হবে। রাতে লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজ সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে '১১ জুন বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস' উপলক্ষ্যে আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি খামাখা দল। এ দলের নেতা এ্যানি চৌধুরী খামাখা শুধুই চিল্লাতে জানে। সাবু-এ্যানি রাজপথে কিছুই করতে পারবেন না। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই শক্তিশালী কমিটি আছে। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মীকে মারধর করা হলে বিএনপির দশ নেতাকে ধরে এনে কঠিনভাবে ধোলাই করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতুসহ একের পর এক মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই ঘরের ভেতরে সভা করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপির নেতারা কটূক্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদেরকে রাজপথে প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে লগি-বইঠা ব্যবহার করা হবে।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট, জহির উদ্দিন মো. বাবরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার রুহুল আমিন, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন লিকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট. রাসেল মাহমুদ মান্না, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান কামাল।