শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরন অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানাতে গিয়েছিলে শিক্ষক প্রতিনিধিদল। রাত পোনে ১২ টা পর্যন্ত শিক্ষক প্রতিনিধিদল ওই চেষ্টা চালান। শেষ পর্যন্ত তাঁদেরকে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে। কথা বলার সুযোগ দেয়নি শিক্ষার্থীরা।
রাত ৮টা ৪০ মিনিটের সময় শাবি শিক্ষকদের প্রতিনিধিদল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান আন্দোলনের দাবির সাথে শিক্ষকরা সমর্থন করলে কথা শুনবেন বলে জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আপনারা আমাদের অভিভাবক, প্রিয় শিক্ষক, আপনারা আমাদের সর্বোচ্চ সম্মানের জায়গা, আপনাদের আমরা হৃদয় থেকে ভালোবাসি। আমাদের বাঁচান। অনেকক্ষণ ধরে অনশনে থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি আমাদের।'
এরপরই 'ইয়েস অর নো' স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে শাবি ক্যাম্পাস। তারপরই তারা এ দুটি শব্দের একটি ছাড়া আর কোনো কথা না শুনতে স্লোগান দিতে থাকেন।
তারমধ্যেও শিক্ষক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা ট্রেজারার আনোয়ারুল ইসলাম হ্যান্ড মাইক নিয়ে কথা বলতে থাকেন। যা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্লোগানের আওয়াজে অস্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি পরে থেমে গিয়ে প্রতিনিধিদল নিয়ে অবস্থান করেন। এসময়ে আবারো ভিসি অপসারণের মুহুর্মুহু স্লোগান তুলেন শিক্ষার্থীরা। পরে আরো কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেন শিক্ষকরা। কিন্তু আন্দোলনে থাকা তরুণ তুর্কিদের আওয়াজে হ্যান্ড মাইকের আওয়াজ কারো কানে পৌঁছায়নি। প্রায় দুই ঘন্টার উপরে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রয়েছেন। এসময়ে শিক্ষার্থীরা বারবারই তাদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করলে কথা বলার সুযোগ দিবেন বলে ঘোষণা দেন।
এ সময়ে শিক্ষকদের ফিরে যেতে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশ্যে হাত তোলে করজোরে অনুরোধ করেন। তার কিছু সময় পর শিক্ষকবৃন্দ কথা বলার জন্য রিকশা করে উচ্চ আওয়াজের মাইক আন্দোলনস্থলে আনা হলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দেন।
এর আগে বিকেল ৪টায় শাবির তিনশ শিক্ষক নিয়ে উপাচার্য আলোচনায় বসেন। সেখানে রাত ৮টায় শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা পোষন না করায় ফিরে যেতে হয় শিক্ষক প্রতিনিধি দলকে।
এদিকে সন্ধ্যায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন শাবির সাবেক শিক্ষার্থীর। তারা নগরীর চৌহাট্টায় মোমবাতি প্রজ্বলন ও মানববন্ধন শেষে এ ঘোষনা দেন।