ঢাকা, শনিবার ৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫শে কার্তিক ১৪৩১

শার্শা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৫২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

যশোরের শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম দুর্নীতি এবং টাকা না দিলে স্বাক্ষর না করে ফাইল দিনের পর দিন আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে প্রকাশ সম্প্রতি বেনাপোলের শিকড়ী দাখিল মাদ্রাসায় একজন আয়া ও একজন নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়।

শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ও সরকারি বিধি মোতাবেক বোর্ড গঠনের মাধ্যমে উল্লেখিত দুটি পদে নিয়োগ প্রদান করেন নিয়োগ বোর্ড। দাখিল মাদ্রাসার ৫০  উর্ধে বয়সী শিক্ষক মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কাদের সম্প্রতি শিক্ষা বোর্ডে এমপিও করার জন্য নিয়োগকৃত দুজনের কাগজপত্র শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমানের নিকট স্বাক্ষর করাতে গেলে কিছু না জেনেই রুমে প্রবেশের সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, তুচ্ছ তাচ্ছিল এবং উচ্চ স্বরে ধমক দেওয়ায় ওই শিক্ষক কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসে রুম থেকে। এ সময় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫/৬ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান পাশের রুমে বসা ছিল।

আব্দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, দুটি নিয়োগের জন্য আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পুটখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাদিউজ্জামান ২০ হাজার টাকা ও আমি নিজে ১৪ হাজার টাকা মোট ৩৪ হাজার টাকা শিক্ষা অফিসার স্যারকে দিয়েছি। অথচ তার দাবিকৃত এক লাখ টাকা উৎকোচ না দেওয়ায় আমার সাথে এমন ভাবে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমি এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত অথচ তিনি আমার কোন কথা না শুনে বুঝে আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল ভাবে দুর্ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দর  নিকট জানানোর পর বিষয়টি সাময়িক ভাবে মিমাংসা করে নেন।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হাদিউজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিজে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তার দাবি এক লাখ টাকা দেওয়া সম্ভব না। 

শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট শার্শায় যোগদান করার পর থেকে উপজেলায় যত গুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে নিয়োগ হয়েছে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে তিনি প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা করে উৎকোচ আদায় করেছেন। পাঁচ বছর অধিক কাল শার্শায় যোগদান করে সজিব নামের একজন বহিরাগতকে তার অফিসে ব্যক্তিগত নিয়োগ দিয়ে সকল উৎকোচ আদায় করে চলেছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অভিযোগ করে জানান, নিয়োগের বিষয়ে তার কাছে কোন ছাড় নেই। চাহিদা মত উৎকোচের টাকা না দিলে ফাইল স্বাক্ষর করেন না। দুর্ব্যবহার তো আছেই। তিনি শিক্ষকদের বিভিন্ন আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে দুর্বল করে থাকে। উৎকোচ দিলে আর কোন সমস্যা থাকে না। একই স্থানে একটানা ৫ বছরেরও অধিক সময়কাল থাকায় তিনি একের পর এক দুর্নীতি করে চলেছেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমানের সাথে জানতে চাইলে তিনি জানান, শিকড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কাদেরের সাথে দুর্ব্যবহারের ঘটনাটি ঘটে ছিল সঠিক। আমি তাৎক্ষনিক ভাবে ভুল শিকার করে নিয়েছি। তবে টাকা পয়সা লেনদেনের কোন ঘটনায় আমি তার সাথে দুর্ব্যবহার করিনি। তার বিরুদ্ধে আনীত অন্যান্য অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।