ঢাকা, রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ ১৪৩১

সংখ্যালঘুদের মন্দির ও বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ও জামাত-বিএনপি-হেফাজত নেতাকর্মীরা

মোঃ জালাল উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৮ অগাস্ট ২০২৪ ০৭:৫৭:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন
সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় রাত জেগে মন্দির পাহারা দিচ্ছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও জামাত-বিএনপি-হেফাজত নেতাকর্মীরা। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর সারাদেশে দেখা দিয়েছে অরাজকতা। দেশের বিভিন্ন থানাসহ স্থাপনায় হামলা করা হচ্ছে। হামলা থেকে রক্ষা করতে এসব পাহারা দিচ্ছেন তারা।
2-2201
 
সরজমিন ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার ০৫ আগস্ট ২০২৪ ইং, শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবরে আনন্দে গণজোয়ার সৃষ্টি হয় মৌলভীবাজার জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায়। এ সময় জনরোষ থেকে থানায় থাকা পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে থানার গেট পাহারা দিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও জামাত-বিএনপি-হেফাজত নেতাকর্মীরা পুলিশকে রক্ষা করতে সক্ষম হন। এর সাথে দূর্বৃত্তরা শনাতন ধর্মের মন্দিরে হামলা করে যেনো নতুন কোন সমস্যার সৃষ্টি না করতে পারে সে জন্য জেলার প্রত্যকটি উপজেলার মন্দিরে পাহারার ব্যবস্থা করেন তারা।
জামিয়া লুৎফিয়া আনওয়ারুল উলুম হামিদনগর বরুণা মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা ক্বারী মুসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বরুণা মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক  স্বাধীনতার যুদ্ধে ১৯৭১ সালে হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পাহারা দিয়েছিলেন। এখন ২০২৪ সালে উপজেলার বিভিন্ন মন্দির রাতের আধারে পাহারা দিচ্ছেন ছাত্র-শিক্ষকরা। 
2-2202
 
তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে যাতে কেউ কোনো ধরনের ধ্বংস চালাতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন এলাকার সচেতন নাগরিকদের আহ্বান জানাই।
উপজেলা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা দেশ সংস্কারে নেমেছি। কোনো প্রকার লুটপাট, ভাংচুর, দুষ্কৃতি আমরা সমর্থন করি না। সকল ধর্মের মানুষ এক সাথে বসবাস করতে চাই। তাই রাত জেগে মন্দির, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাহারা দিচ্ছি। দেশ সংস্কারের কাজে সকল শ্রেণি মানুষের সহযোগিতা চাই।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি তারেক মাহফুজ বলেন, লুটপাট, রাহাজানি ইসলাম পরিপন্থী। অতীতে সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামী পন্থীরা নির্যান করে জামায়াত-বিএনপি'র উপর চাপিয়ে দেওয়ার বহু নজির রয়েছে। তাই জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও মন্দির রক্ষা করতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শ্রীমঙ্গল উপজেলার সভাপতি মোঃ সাদিকুল ইসলাম বলেন, এ দেশ রক্ষার দায়িত্বও আমাদের। শেখ হাসিনার পতনের বিজয় উল্লাস প্রমাণ করে দেয় মানুষ কত কষ্টে ও জিম্মি ছিলো। সবকিছু ভুলে গিয়ে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও দেশপ্রেম সকল নাগরিকদের আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শ্রীমঙ্গলসহ সারাদেশে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার সবার কাছে আহ্বান।
প্রতি রাতে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও জামাত-বিএনপি-হেফাজত এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের জান মাল, মন্দির পাহারা দিচ্ছে বলে জানান তারা।