সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক পক্ষের ওপর অপর পক্ষের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সন্ধ্যার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একপক্ষের ইফতারি বিতরণের সময় প্রথম হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় হামলাকারী পক্ষটি অপর পক্ষের ১০ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। শিগগিরই কমিটি ঘোষণা হবে—এমন সংবাদে পদপ্রত্যাশী অনেকে সক্রিয় হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বহুধাবিভক্ত হয়ে এখন রাজনীতি করছেন বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতা–কর্মীরা।
ছাত্রলীগের একটি পক্ষের অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটি অংশের নেতা খন্দকার মো. সাঈদ তাঁর অনুসারীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে অসহায় মানুষের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই আরেকটি অংশের নেতা মো. শরীফ হোসাইনের নেতৃত্বে একদল নেতা-কর্মী এসে সাঈদের ওপর হামলা চালান।
সাঈদের অনুসারীরা বলছেন, অতর্কিত হামলা চালিয়ে সাঈদসহ কয়েকজনকে আহত ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে শরীফের অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে সাঈদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ১০ জন আবাসিক ছাত্রের বিছানাপত্র, পোশাকসহ জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দিয়ে তাঁদের হল ত্যাগে বাধ্য করে।
সাঈদের অনুসারী এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘ইফতারের পর আমি টিউশনি করতে চলে যাই। খবর পেয়ে এসে দেখি, আমার কক্ষ থেকে বিছানাপত্র, পোশাকসহ সবকিছু বাইরে ফেলা অবস্থায় আছে। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই সবকিছু ভিজে গেছে। সেসব বিছানাপত্র তুলতে গেলেও শরীফ ও তাঁর অনুসারীরা হুমকি দেন। বর্তমানে আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি।’
খন্দকার মো. সাঈদ বলেন, ‘সামনে কমিটি হবে। তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই আমার এবং আমার অনুসারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি আমার কর্মীদেরও জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
তবে হামলার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা মো. শরীফ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কিংবা হল থেকে কাউকে বের করে দেওয়া বা জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি। ’ ১০ জন ছাত্রকে হল থেকে বের করে দিলে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়ে যেত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মূলত হলে কয়েকজন ব্যাচম্যাটের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা তাদের গিয়ে বলেছি হলের মধ্যে কোনো গ্যাঞ্জাম করা যাবে না। বাইরে গিয়ে এসব সমস্যা সমাধান কর। এর বেশি কিছু না। ’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তরিকুল ইসলামের সঙ্গে রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোটখাটো একটা সমস্যা হয়েছে। আমরা বিষয়টি সমাধানে কাজ করছি। ’
হল থেকে ১০ ছাত্রকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে জানার জন্য এবং সমাধানের জন্য আমরা এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবস্থান করছি। এখানে হল প্রভোস্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আছেন। যাই ঘটুক এটা সমাধান হয়ে যাবে আশা করছি। বড় কিছু হবে না