সনাতন পদ্ধতিতে পাথর তোলার অনুমতি ও কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট চলছে। সোমবার (৩১ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট।
রোববার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত না আসায় পণ্যবাহী পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। গত ১৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে এই ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একইসঙ্গে দাবি আদায় না হলে পুরো বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু হলেও মহাসড়কগুলোতে বেশ কিছু পণ্যবাহী পরিবহন চলতে দেখা গেছে। ফলে জনজীবনে ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি।
পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, ‘সিলেটের ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং এবং লোভাছড়া পাথর কোয়ারিগুলো প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ থাকায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক চরম সংকটে পড়েছেন। অধিকাংশ ট্রাক মালিক ব্যাংক ঋণ বা কিস্তিতে গাড়ি কিনেছিলেন। কিন্তু কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে ট্রাক মালিকদের পণ্য পরিবহনে ভাটা পড়েছে। এই অবস্থায় শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৪, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২ এবং কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় একটি করে মোট ৮ টি পাথর কোয়ারি আছে।
ব্যুরোর তথ্য মতে, গত ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ 'পাথর উত্তোলনে সমস্যা নিরসনে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি' গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ও ২ নভেম্বর ২০২০ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী সব পাথর কোয়ারি ইজারা বন্ধ আছে।
এদিকে, কারও চাপে নতিস্বীকার না করতে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ ও সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনরতদের আইনের আওতায় আনার আহবান জানিয়ে গতকাল রাতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন সিলেটের ২০ নাগরিক।