আগামী রোববার (৩০ অক্টোবর)-এর মধ্যে পাথর উত্তোলন করার সুযোগ না দিলে পরদিন সোমবার (৩১ অক্টোবর) থেকে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতারা। দাবি মানা না হলে সমগ্র সিলেট বিভাগে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি শুরুর হুমকি দিয়ে আন্দোলনে নামছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানান- সিলেটের ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং এবং লোভাছড়া পাথর কোয়ারীগুলো থেকে স্বাধীনতা উত্তরকাল থেকে সারা দেশের পাথর সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। প্রায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও পরিবহণ মালিক-শ্রমিক এ পাথর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে সিলেটের পরিবহণ খাত বিশেষ করে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকদের ব্যবসায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অধিকাংশ ট্রাক মালিক ব্যাংক ঋণ নিয়ে অথবা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে তাদের গাড়ি কিনেছেন। গত ৫ বছর ধরে কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে ট্রাক মালিকদের পণ্য পরিবহণে ভাটা পড়েছে। অনেক মালিক ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে ইতোমধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকেই ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়েছেন চরম আর্থিক সংকটে।
পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতাদের দাবি পাথর উত্তোলনের নামে বিরানভূমি সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো। পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে কোয়ারিগুলোর পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখেছে প্রশাসন; কিন্তু এতে ‘আতে ঘা’ পাথর রাজ্যের লর্ডদের। তারা গরিব শ্রমজীবীদের উস্কানি দিয়ে মাঠে রাখার পাশাপাশি চালাচ্ছেন নানামুখী তৎপরতা।
ট্রাক মালিক সমিতির নেতা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেছেন- ‘এর আগে আমরা গত ১৬ অক্টোবর সিলেটের পাথরকোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করি। আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সিলেটের পাথরকোয়ারি খুলে দেওয়া না হলে ৩১ অক্টোবর থেকে সিলেট জেলায় ৪৮ ঘণ্টা এবং পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগে সব প্রকার পণ্য পরিবহণ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করা হবে।’
প্রসঙ্গত- যৌক্তিক-অযৌক্তিক দাবিতে পূর্বঘোষণা দিয়েও ও পূর্বঘোষণা ছাড়াই পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়ে সিলেটবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকেরা। আবারও পরিবহণ শ্রমিকদের ডাকা পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হবে সিলেটবাসীকে।