সিলেটে মাছ বিক্রেতা সোহাগ হত্যা মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রায়ে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া পেনাল কোডের আরেকটি ধারায় তাদের প্রত্যেককে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূঁইয়া এ রায় ঘোষণা করেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি মো. জুবায়ের বখত ।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নগরের ঘাসিটুলা সবুজ সেনা বি-ব্লকের ৭০ নং বাসার মইন উদ্দিন মিয়ার ছেলে মো. শাকিল আহমদ, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া বাবুল চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনের বাসিন্দা ও বর্তমানে নগরের ঘাসিটুলা বেতবাজার আনোরুল ইসলামের ১৫৬ নং বাসার বাসিন্দা জয় আহমদ দিপু ও ঘাসিটুলা সবুজসেনা বি-ব্লকের ৭৫ নং বাসার মিনহাজ মিয়ার ছেলে সাইয়ুম আহমদ।
এছাড়া মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথের জীবনপুর গ্রামের রায়খাইল এলাকার রজব আলীর ছেলে ও নগরের ১০নং ওয়ার্ডের মোল্ল্যাপাড়ার ডি-ব্লকের ৫২ নং বাবুল মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিব, নগরের কেওয়াপাড়া ১১৯ নং বাসার মৃত ইমরান হোসেনের ছেলে রুহেল ওরফে রুমেল।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, সোহাগ আহমদ বগুড়া সদর উপজেলার আলিয়া বাজার ঝোপগারি পূর্বপাড়া এলাকার আশরাফ আলী ছেলে এবং সিলেট নগরের ১০ নং ওয়ার্ডের মজুমদারপাড়া ময়না মিয়ার কলোনীতে ভাড়া থাকতেন। নগরের কাজিরবাজারে মাছ বিক্রি করতেন সোহাগ আহমদ (১৭)। ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে ডেকে বাসা থেকে বের করে নেয়। পরবর্তীতে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর ১৬ এপ্রিল সোহাগের মরদেহ কোতোয়ালি থানাধীন এলজিইডি ভবনের পেছনে গাভিয়ার খালে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার দেহে অসংখ্য ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ও হাত-পায়ের রগ কাটা ছিল।
এ ঘটনায় নিহতের মা ফুল বানু বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা ও গুমের ঘটনায় মামলা করেন। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ৬ আসামিকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ভূঁইয়া। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- মামুন, ডালিম, মোতালেব, সাকিল, সাইয়ুম ও দিপু। এরমধ্যে দুইজন পলাতক রয়েছেন। মামলাটি ওই আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৬৬৬/’১৯ মূলে রেকর্ড করে বিচার শুরু হয়। মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।