ঢাকা, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জের অদম্য মেধাবী মুনতাহিনা পড়ার সুযোগ পাবে কি?

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সুনামগঞ্জ : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৭ জানুয়ারী ২০২২ ০৮:০৫:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

মুনতাহিনা প্রমি অদম্য মেধাবী এক শিক্ষার্থীর নাম। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার গাগলী নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সে। পরীক্ষার আগে কোন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ হয় নি তার। গাগলী নারায়ণপুর গ্রামের শাহজামাল মিয়া ও হেলেনা বেগমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চার নম্বর সে। ছয় বছর আগে বাবা শাহজামাল মিয়া মারা যাবার পর চার বোন ও এক ভাইয়ের সঙ্গে মুনতাহিনা প্রমিও একই গ্রামে মামা জসিম উদ্দিনের বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। সেই থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত জসিম উদ্দিনই এই পরিবারের (বোনের পরিবারের) ভরসা।

৮ম শ্রেণিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছে মুনতাহিনা প্রমি। এবার এসএসসি’র ফলাফলে খুশি হলেও এইচএসসি পড়তে পারবে কি-না এই নিয়ে চিন্তিত প্রমি ও তার মা হেলেনা বেগম।

হেলেনা বেগম জানালেন, স্বামী মারা যাবার আগে থেকেই কয়েক বছর অসুস্থ ছিলেন। জসিম উদ্দিনসহ তার তিন ভাইয়ের সহায়তায় অভাব অনটনে সংসার চলছে তার (হেলেনার)। ভাইদের সাহায্যেই বড় মেয়েকে অনার্স পাস করিয়েছেন, বিয়েও দিয়েছেন। অন্য ছেলে মেয়েরাও পড়াশুনা করছে। প্রমি ভালো কলেজে পড়াশুনা করতে চায়। কিভাবে পড়বে সে, শহরে ছাত্রীনিবাসে রেখে পড়াশুনা করানোর ক্ষমতা নেই মামাদেরও। বললেন, জানি না মেয়েটির আশা পূরণ হবে কি-না।

মুনতাহিনা প্রমি বললো, নবম শ্রেণিতে সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। এক মাস বাড়ি থেকে এসে ক্লাসও করেছি। বাড়ি থেকে শহরে আসতে সময় বেশি লাগে। প্রতিদিন অনেক টাকা ভাড়াও লাগে। এজন্য আবার গ্রামের গাগলী নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ফিরে যাই। ওখানে শিক্ষকদের ¯স্নেহ মমতা পেয়েছি, তারা সাধ্যমত সহায়তা করেছেন। কলেজে এবং ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই, টিউশনি করে বা অন্য কোন কাজ করেও পড়াশুনা করার সুযোগ পেলে করবো। আমি প্রশাসনিক ক্যাডারে চাকুরি করে দেশের এবং মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।