চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কাঞ্চনায় যাতায়াতের সব সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী।প্রায় এক যুগ ধরে অবহেলিত স্থানীয়রা।
টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে গত আগস্ট মাসে ভেঙ্গে যায় কাঞ্চনার ৮নং ওয়ার্ডের কাজীর বাড়ি হাজারিখীল সংলগ্ন জয় মঙ্গল রোডের ব্রীজ ও বিভিন্ন জায়গা।ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে খাল ডুবে পাহাড়ি পানির স্রোতে ভেঙ্গে যায় সড়কটির কাজীর জামে মসজিদ সংলগ্ন ব্রীজ,বণিক পাড়ার উত্তরে দোকানের নিকটবর্তী অংশ ও গ্রামীণ সড়ক হসপিটালের পশ্চিমের সড়কটিও।ফলে যাতায়াতের তিনটি সড়কই ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।ভেঙ্গে যাওয়া সড়কটির তিনটি অংশের মধ্যে দুইটি অংশ একেবারে সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন ও বড় আকারে ভাঙ্গায় কোন রকমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে বাসিন্দারা।কাজীর জামে মসজিদ সংলগ্ন ব্রীজটি পুরোপুরি ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেলেও সামান্য টিকে থাকা অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোন রকমে যাতায়াত করছেন তারা।রোগী আনা-নেওয়া থেকে শুরু করে জরুরি যেকোনো প্রয়োজনে রিক্সা কিংবা সিএনজি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের।যেকোনো মুহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।জয় মঙ্গল রোড সড়কটি যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ একযুগ ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।ফলে সড়কের অধিকাংশ জায়গায় গর্ত আর ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।এরমধ্যে হালকা বৃষ্টিতে কাঁদায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে সড়কটি।কাঞ্চনা ফুলতলা থেকে সৌমিল মোড় হয়ে বাশঁখালী পুকুরিয়ার প্রধান সড়কে মেরামত কিংবা অন্য যেকোনো কারণে যাতায়াত বন্ধ হলেই জয় মঙ্গল সড়কটি দিয়ে সকল যানবাহন চলাচল করে।জানা যায়, এই সড়কটি মনুফকিরহাট হয়ে পুকুরিয়া হয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতের প্রধান সড়ক হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু সুবিধাজনক হওয়ায় এটার পরিবর্তে সৌমিল মোড় হয়ে বর্তমান যে সড়কটি রয়েছে সেটি প্রধান সড়ক করা হয়।
জয়মঙ্গল সড়কের মূলত কাঞ্চনা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের উপর অবস্থান।৬,৮ ও ৯নং ওয়ার্ড।সড়কের দক্ষিণ মাথায় ৯নং ওয়ার্ড এবং উত্তর মাথায় ৬নং ওয়ার্ড আর মাঝখানে বিশাল অংশজুড়ে ৮নং ওয়ার্ড।গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ৯নং ওয়ার্ডের অংশে যে অল্প সড়ক পড়েছে সেটির কাজ করা হলেও ৮নং ওয়ার্ড শুরু হওয়ার আগেই কাজ শেষ করা হয়।শেষ হওয়া কাজের জায়গা থেকে ব্রীজের দূরত্ব মাত্র ১০ থেকে ১৫ ফুট হলেও ৮নং ওয়ার্ডে হওয়ায় ব্রীজ পর্যন্তও কাজের স্পর্শ আর লাগেনি।তবে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঢাকায় গিয়ে নানা চেষ্টা করে ৯নং ওয়ার্ডের কাজটি আনতে সক্ষম হয়।যে সুযোগ ৮নং ওয়ার্ডের হয়নি।জানা যায়,প্রায় পাঁচ বছর আগে সাবেক ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান ব্রীজ হতে উত্তরে ইট বিছিয়ে আরসিসি দ্বারা কাজ করলেও তা অল্পদূর যেতে না যেতেই থমকে যায়।একই অবস্থা ৬নং ওয়ার্ডেও।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ এক যুগ ধরে এই সড়কটির উন্নয়ন হয়নি।অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে।ফলে যাতায়াতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।অথচ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
আরেকজন জানান, যাতায়াতের সব সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় জিনিসপত্র আনতে অসুবিধা হওয়ায় তুলনামূলক অনেক জিনিসের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ উদ্দিন জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর বারবার সড়ক উন্নয়নসহ নানা বরাদ্দের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করে আসছি।কিন্তু নিজ হাত দিয়ে কোন কাজ করার সুযোগ পাইনি।চেয়ারম্যান নিজে নিজে কয়েকটি জায়গায় কাজ করেছেন।এরআগে সাবেক চেয়ারম্যান মোজাফফর এর আমলে কাজের সুযোগ হয়েছিল।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস জানান, ভেঙ্গে যাওয়া সড়কের বিষয়ে কেউ জানায়নি, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইঞ্চিনিয়ারকে জানাবো।সম্প্রতি কারণে উপজেলার সবকিছু যে মিটিংয়ের মাধ্যমে বরাদ্দ করা হয় সেই মিটিংটা এখনো করতে পারিনি।অতিদ্রুত মিটিংটার মাধ্যমে আমরা প্রজেক্ট নিতে পারবো।