বড়া বিক্রি করে ১৬ বছর ধরে সংসার চালান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে বিকাল ৩ টা হতে রাত ৯ টা পর্যন্ত রসুনের চপ, ডিমের বড়া, মাংসের বড়, মাছের বড়া বিক্রি করেন।
ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের গন্ডগ্রাম এলাকায়। তাঁকে গত কয়েক বছর ধরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে পসরা সাজিয়ে বিভিন্ন বড়া বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে ।
জানা যায়, সাপ্তাহিক ২ জায়গায় ভাগ করে বড়া বিক্রির করেন। নেকমরদ বাজারে ১১ বছর ও বালিয়াডাঙ্গী বাজারে ৫ বছর ধরে এ কাজ করছেন। প্রতিদিন এ ব্যবসা থেকে একজন কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করার পরেও ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা লাভ থাকে। এতেই সুখে দিন চলে যাচ্ছে তাঁর।
ইব্রাহিম জানান, করোনাকালে খুব খারাপ সময় গেছে । ‘লকডাউনের কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। তিন মেয়েকে নিয়ে খুব খারাপ সময় কেটেছে। স্ত্রী লিপি আক্তার সাংসারিক কাজের পাশাপাশি গ্রামে কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করত। কাঁথা সেইলা করার বিনিময়ে পাওয়া সামান্য আয় দিয়ে করোনাকালে সংসার চালিয়ে নিতে হয়েছে। ধার দেনা করতে চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এমন সময় কোনো দিন যেন আর ফিরে না আসে।
’ইব্রাহিমের বড় মেয়ে বর্ষা আক্তার এসএসসি পরীক্ষার্থী। মেজো মেয়ে তাসনিম আক্তার বৃষ্টি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে এবং ছোট মেয়ে সুমাইয়া আক্তার চতুর্থ শ্রেণিতে। মেজো মেয়ে ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। ৩ মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে মানুষ বানিয়ে দেশের কাজে নিয়োজিত করতে চানা লিপি ও ইব্রাহিম দম্পতি।
ইব্রাহিমের দোকানের রসুনের চপ ৫ টাকা, ডিমের বড়া ৫ টাকা, মাংস ও মাছের বড়া ১০ টাকা করে বিক্রি হয়। সন্ধ্যার পর থেকে অল্প দামে এই সুস্বাদু খাবার খেতে ভিড় জমে তাঁর দোকানে। রাত ৯টার আগেই শেষ হয় বেচাবিক্রি।
উপজেলা পরিষদ মার্কেটের ব্যবসায়ী আল মামুন জীবন জানান, ইব্রাহিমের তেলে ভাজা খাবারের দোকান মার্কেটটির নতুন রূপ দিয়েছে। সন্ধ্যায় পর মার্কেটে আসা লোকজনই তাঁর ক্রেতাই। তাঁর বাড়ি রাণীশংকৈলে হলেও তিনি বালিয়াডাঙ্গীর মানুষের মন জয় করেছেন।