গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) বার্ষিক বনভোজনে গিয়ে চলন্ত বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবিসহ ১৩ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আইইউটির ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।
নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)। তারা সবাই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বনভোজন আয়োজনে নিরাপত্তা ঘাটতি ও অবহেলার কারণে মেধাবী তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবিসহ ১৩ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা টানা তৃতীয় সপ্তাহ তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যাপারে ওআইসি থেকে বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কতিপয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি এবং প্রশাসনের একটি অনুমোদনহীন সিন্ডিকেটের প্রভাব রয়েছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং কতিপয় শিক্ষক চরম অসংবেদনশীলতা এবং দায়িত্বহীনতা প্রদর্শন করেছে। মর্মান্তিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের সমস্যাগুলো উন্মোচন করেছে শিক্ষার্থীরা, যা জবাবদিহিতা ও সংস্কারের জন্য একটি বৃহদাকারের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
এসময় অসদাচরণ, অবহেলায় জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিক্ষোভের পর ওআইসি মহাসচিব বাংলাদেশ ভ্রমণ এবং শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ সমাধানের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের ঘোষণা করেছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পূর্ণরূপে পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এবং সন্তোষজনক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন চালিয়ে যাবে বলে সংবাদ সম্মেলনে করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর আইইউটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যান। যাওয়ার পথে বাসগুলো আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাসের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শ হয়। এতে বাসে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে