পাঁচলাইশ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় থেকেও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে এ যেন শহর নামক গ্রামে বাস করছি আমরা। পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৭টি মহল্লার সর্দারদের নিয়ে গঠিত মহল্লা পরিষদের উপদেষ্টা, বিশিষ্ট সমাজ ও দানবীর আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল মামুন পাচঁলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী বকসু নগরের আলী হোসেন কন্ট্রাক্টরের বাড়িতে ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুস কন্ট্রাক্টরও ছিলেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও স্থানিয় মেম্বার। এয়ার আলী হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাঁর শিক্ষা জীন শুরু। পরে পাঁচলাইশ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, হাটহাজারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর আর্দশে উজ্জীবিত হয়ে ১৯৯০ সালে পাঁচলাইশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন তিনি। ১৯৯৪ সালে পাচঁলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের ‘রহিম-রিদুয়ান’ পরিষদের ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে সরকারী আশেকানে ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা পরিষদ-এর সদস্যসহ অসংখ্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠায় চালিয়ে যাচ্ছেন সমাজ সেবামুলক কর্মকান্ড।
এছাড়া তিনি বকসু নগর জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করাকালীন সময়ে বকসু নগর জামে মসজিদে এক হাজার মুসল্লীর নামাজ পড়ার জায়গার পরিধী বাড়ানোর উদোক্তা ছিলেন তিনি এবং তাঁর উদ্যোগেই বকসুনগর জামে মসজিদের কবরস্থানটিকে এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। যা একসময় ছিল শুধুমাত্র তাদের পারিবারিক কবরস্থান। ১৯৯৯ সালের ৪ঠা মার্চ সন্ধ্যা রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে পাঁচলাইশ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের দেয়ালে ছাত্রলীগের চিকা মারা অবস্থায় জামাত শিবিরের অতর্কিত হামলার শিকার হন তিনি। সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করলে, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
কিন্তু ওই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁর এক সহযোগী নিহত হন। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলার বাদী হওয়ার কারণে সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকি ও বারবার তার বাসভবনে এসে হত্যাকারিরা খুঁজতে থাকে তাকে। ফলে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান বিদেশে পাড়ি জমান। এ কারণে দেয়া হলোনা তাঁর ডিগ্রি পরীক্ষা। অবশ্য বিদেশের মাটিতেও তিনি দুবাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে দেশে ফিরে এসে আবারো আওয়ামী রাজনীতিসহ পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সমাজ সেবায় লিপ্ত হন তিনি। গতকাল ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর মুখোমুখি হলে, তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা, সন্ত্রাস আর মাদক এই ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে বলেন, বিগত সময়ে পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডটির অবকাঠামোগত উন্নয়ণ না হওয়ায় এখনো শহর নামক গ্রামে বাস করছি আমরা। তিনি বলেন, এই ওয়ার্ডের একটি অন্যতম ভোগান্তির নাম অক্সিজেন বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সড়ক। সড়কটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ দুই লেইনের রাস্তার একপাশের উন্নয়ন কাজের ধীরগতির কারণে পাঁচলাইশ বাসীর পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পূরো নগরবাসীকে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমের পুরোটিতেই ওয়ার্ডের শীতলঝর্ণা, ফকিরাবাদ, বকসুনগর, ভক্তপুর, নেজামে হামছা, করিমগঞ্জ, জানালি নগর, নাজিরাবাদ, আমিন নগর, হামিদপুর, খন্দকারাবাদ,হাজ্বীরপুল, সালেহ নগর, পশ্চিম হাজ্বীপাড়া, পশ্চিম শহীদ নগর, পূর্ব হাজ্বী পাড়া, পূর্ব শহীদ নগর, জাহান পুর, মীর পুর, কামরাবাদ, সামাদপুরসহ এক তৃতীয়াংশ এলাকার বাসিন্দারা পানি বন্দি হয়ে অবর্নণীয় দূর্ভোগে পড়তে হয়। অন্যদিকে নয়ারহাট নিধিরামের বাড়ি, হরিপুর, নাথপুর, চালিতাতলী শীলবাড়ি এলাকায় বসবাসরত ৪টি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের নেই বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। শিক্ষাদীক্ষা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার শিশুরা। এছাড়া নোংরা পরিবেশের কারণে মশা-মাছির উৎপাত বেড়ে গিয়ে ঘরে-ঘরে রোগ বালাই লেগেই আছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সর্বনিন্ম দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করছে। এ দায় ও ব্যর্থতা আমাদের বলে মন্তব্য করে এ ব্যাপারে তিনি সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন।