করোনার চতুর্থ ঢেউ সামলে ওঠার মাস পার না হতেই দেশে লেগেছে পঞ্চম ঢেউয়ের ধাক্কা। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের ওপরে রয়েছে টানা ২১ দিন। গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ১২.৭৩ শতাংশ, যাকে সংক্রমণের উচ্চমাত্রা বলা হয়। শনাক্তের এই হার ছিল ৬৬ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ৫৪ দিন পর ফের এক দিনে পাঁচজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৭ জুলাইয়ের পর এক দিনে এত মৃত্যু কখনো হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি হলে পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। সেই হিসেবে এক সপ্তাহ আগেই শুরু হয়েছে পঞ্চম ঢেউ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৮২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬১৪ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন ছয় শতাধিক রোগী শনাক্ত হলো দেশে। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ১২.৭৩ শতাংশ। সবশেষ এর চেয়ে বেশি (১৩.৭০ শতাংশ) শনাক্ত হারের খবর এসেছিল গত ১৬ জুলাই। এ ছাড়া গত ৩১ আগস্ট থেকে টানা ২১ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
গত জুনের মাঝামাঝি দেশে শুরু হয় করোনার চতুর্থ ঢেউ। জুলাইয়ের আগেই শনাক্তের হার ছাড়িয়ে যায় ১৫ শতাংশ। এক মাস তাণ্ডবের পর মধ্য জুলাই থেকে সংক্রমণ কমতে শুরু করে। তবে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নামে ১১ আগস্ট। ২২ আগস্ট শনাক্তের হার নেমে আসে ৩.১৫ শতাংশে। পরদিন থেকে ফের বাড়তে শুরু করে। ২৫ আগস্ট ৪ শতাংশ ও ৩১ আগস্ট ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মাত্র ২০ দিন ছিল ৫ শতাংশের নিচে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে রোগী শনাক্তের হার টানা দুই সপ্তাহের বেশি ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। অর্থাৎ, চতুর্থ ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার এক মাসের মধ্যেই শুরু হলো পঞ্চম ঢেউ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী। বয়সে পঞ্চাশোর্ধ্ব। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন এবং ময়মনসিংহ, লক্ষ্মীপুর ও পটুয়াখালী জেলায় একজন করে মারা গেছেন। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ২০ লাখ ১৮ হাজার ৮২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ২৯ হাজার ৩৪৫ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৯ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ জন।